আন্তর্জাতিক

গাজায় নতুন করে শুরু হওয়া লড়াই দ্বিতীয় দিনে গড়িয়েছে

গাজায় নতুন করে শুরু হওয়া লড়াই দ্বিতীয় দিনে গড়িয়েছে

হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে এক সপ্তাহ স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ভেঙে পড়ার পর গাজায় নতুন করে শুরু হওয়া লড়াই দ্বিতীয় দিনে গড়িয়েছে। মধ্যস্থতাকারীরা জানিয়েছেন, ইসরায়েলের বোমাবর্ষণের কারণে চলমান যুদ্ধবিরতির উদ্যোগ জটিল হয়ে পড়ছে।

 

শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর গাজার দক্ষিণাংশের খান ইউনিস শহরের পূর্বাংশে তীব্র বোমাবর্ষণ করে ইসরায়েল। ঘটনাস্থল থেকে ধোঁয়ার কুণ্ডুলি আকাশের দিকে উঠতে শুরু করে বলে শহরটিতে থাকা রয়টার্সের সাংবাদিকরা জানিয়েছেন।

 

শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানান, ইসরায়েলের বোমা হামলায় ১৮৪ জন নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে অন্তত ৫৮৯ জন আর ২০টিরও বেশি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এলাকাটির বাসিন্দারা গাড়িতে করে জিনিসপত্র নিয়ে রাস্তায় নেমে আসে, তারা আশ্রয়ের খোঁজে পশ্চিম দিকে রওনা হয়।

 

গাজায় নতুন করে লড়াই শুরু হয়ে গেলেও মধ্যস্থতাকারী কাতার যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছিল। কিন্তু পরে আলোচনা ভেস্তে যায়। ২৪ নভেম্বর প্রথম চার দিনের যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর দুইবারে তা আরও তিন দিন বাড়ানো হয়েছিল। ইসরায়েল জানিয়েছিল, হামাস প্রতিদিন ১০ জন করে জিম্মির মুক্তি দিলে তারা যুদ্ধবিরতি অব্যাহত রাখবে।

 

কিন্তু সাত দিনের যুদ্ধবিরতির মধ্যে হামাসের হাতে বন্দি নারী, শিশু ও বিদেশি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার পর গোল বাঁধে ইসরায়েলি সেনা ও বেসামরিক পুরুষদের নিয়ে। মধ্যস্থতাকারীরা তাদের মুক্তি দেওয়ার উপায় খুঁজে পেতে ব্যর্থ হন।

 

আগের শর্তে তাদের মুক্তি দিতে রাজি হয়নি হামাস। উভয়পক্ষের প্রস্তাবিত শর্ত পরস্পর প্রত্যাখ্যান করে। এরপর আলোচনা আরও এগোয়নি। আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার জন্য ইসরায়েল ও হামাস একে অপরকে দায়ী করেছে।

 

জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, নতুন করে শুরু হওয়া লড়াই গাজায় বিরাজমান তীব্র মানবিক সংকটকে আরও গভীর করে তুলবে। জেনিভায় জাতিসংঘের মানবিক দপ্তরের মুখপাত্র ইয়েন্স লার্কা বলেন, “গাজায় নরক ফিরে এসেছে।”

 

জাতিসংঘের ত্রাণ বিষয়ক প্রধান মার্টিন গ্রিফিথ বলেন, “আজ কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বহু মানুষ হতাহত হয়েছে। আবার পরিবারগুলোকে সরে যেতে বলা হয়েছে। আশা মিলিয়ে গেছে।” তিনি জানান, গাজার নারী, শিশু ও পুরুষদের ‘যাওয়ার জন্য নিরাপদ কোনো জায়গা নেই আর তারা অল্পের ওপর বেঁচে আছে’।

 

ইসরায়েল অভিযোগ করে বলেছে, হামাস তাদের হাতে বন্দি সব নারীকে মুক্তি দিতে রাজি হচ্ছে না। একজন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইসরায়েলের নারী সেনাদের মুক্তির বিষয়কে কেন্দ্র করেই মূলত আলোচনা ভেঙে যায়।

 

গত ৭ অক্টোবর গাজার সীমান্ত সংলগ্ন ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস নজিরবিহীন হামলা চালায়। হামলায় ১২০০ জন নিহত হয়েছে এবং তাদের অধিকাংশই বেসামরিক বলে ইসরায়েল জানিয়েছে। ওই দিন প্রায় ২৪০ জনকে বন্দি করে গাজায় নিয়ে জিম্মি করে রাখে হামাস।

 

হামাসের হামলার প্রতিশোধ নিতে ওই দিন থেকেই প্রায় সবদিক থেকে গাজা অবরুদ্ধ করে ভয়াবহ আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েল। তাদের অবিরাম বোমাবর্ষণ ও গোলা হামলায় এ পর্যন্ত ১৫ হাজারেরও বেশি গাজাবাসী ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, এদের প্রায় ৪০ শতাংশ শিশু।

 

আরও খবর

Sponsered content