আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হামলা, নিহত অন্তত ১২

বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হামলা, নিহত অন্তত ১২

বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির জান্তা সরকারের সেনাবাহিনী কামানের গোলা ছুড়েছে। এতে ১২ জনেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলিমের নিহতের খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠনের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে তুর্কি সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি।

 

মানবাধিকার সংগঠন ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশন জানিয়েছে, গত দুই দিন ধরেই মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনী নির্বিচার হামলা চালাচ্ছে। গতকাল রাখাইনের বুচিডং এলাকার হপন নিও লেক গ্রামে কামানের গোলা ছুড়েছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এতে ১২ জনেরও বেশি রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মুসলিম নিহত হয়েছেন।

 

ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশন সহপ্রতিষ্ঠাতা রো নে সান লুইন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, বুচিডংয়ে স্থানীয় আরাকর যোদ্ধা ও মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মধ্যে তুমুল লড়াই চলছে। এ লড়াইয়ে সবচেয়ে বেশি হতাহত হয়েছেন রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মানুষেরা। মূলত তারাই যেন এ হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছেন।

 

এর আগে ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনী ব্যাপক দমন–পীড়ন শুরু করলে রোহিঙ্গারা ব্যাপকভাবে দেশত্যাগ করতে বাধ্য হয়। সেই সময়ে ১২ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিল। এখন তারা কক্সবাজারে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবিরে বসবাস করছে।

 

মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতী জানিয়েছে, বুচিডং বাংলাদেশের টেকনাফ থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে। গত কয়েক দিন ধরে এ অঞ্চলে আরাকান আর্মির (এএ) সঙ্গে ক্ষমতাসীন জান্তার সেনাবাহিনীর তুমুল সংঘর্ষ চলছে। এমন পরিস্থিতিতে এ রাজ্য ছেড়ে পালাতে শুরু করেছে হাজার হাজার মানুষ। এবারও সীমান্ত পাড়ি দিয়ে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে প্রবেশ করার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

 

গত ১৫ জানুয়ারি রাখাইন রাজ্যের পালেতওয়া শহরটি দখলে নেওয়ার দাবি করে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। এরপর গত শুক্রবার আরাকান আর্মি জানায়, তারা রাখাইনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বন্দনগরী পাকতাও দখল করে নিয়েছে।

 

এর পর থেকেই মূলত সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির সঙ্গে তুমুল লড়াই শুরু হয়। আরাকান আর্মি এখন পুরো রাখাইন রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে।