সারাদেশ

ট্রেনে আগুন: ছেলের ছবি হাতে হাসপাতাল-মর্গে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বাবা

ট্রেনে আগুন: ছেলের ছবি হাতে হাসপাতাল-মর্গে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বাবা

আবদুল হকের দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে দ্বিতীয় সন্তান আবু তালহা (২৪) সৈয়দপুরে অবস্থিত বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের যন্ত্র প্রকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। রাজধানীতে বেনাপোল এক্সপ্রেসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর থেকেই তিনি নিখোঁজ। নিখোঁজ ছেলের ছবি হাতে হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বাবা আবদুল হক। শনিবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গের সামনে দেখা মেলে তার।

 

রাতেই ঢাকায় এসেছেন বেসরকারি ওষুধ প্রতিষ্ঠানের কর্মী আবদুল হক। তিনি জানান, ঢাকা হয়ে সৈয়দপুর যাচ্ছিলেন তার ছেলে। ফরিদপুর থেকে সন্ধ্যায় ছেলেকে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে তুলে দেন। আসন ছিল ‘চ’ বগিতে। রাতে টেলিভিশনের খবরে দেখেন ট্রেনে আগুন লেগেছে।

 

ট্রেনে থাকা অবস্থায় ছেলে আবু তালহার সঙ্গে সর্বশেষ কথা হয়েছিল বাবার। ছেলে বলেছিলেন, ‘আব্বু, দেড় ঘণ্টার মতো লাগবে। ঢাকায় পৌঁছে ফোন দেব।’ পরে সন্ধ্যায় ট্রেনে আগুন লাগার খবর পান। এসময় ছেলের মোবাইল ফোনে কল করলে তা বন্ধ পান।

 

তখনই রওনা দিয়ে রাতে ঢাকায় পৌঁছান তিনি। এরপর ঢাকা ও মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ কয়েকটি হাসপাতালে খুঁজেও ছেলেকে পাননি। এরপর মোবাইল ফোনে ছেলের ছবি নিয়ে হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরছেন।

 

উল্লেখ্য, শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) রাতে ঢাকাগামী চলন্ত বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কমলাপুরে প্রবেশের সময় একটি কামরায় আগুন দেয় নাশকতাকারীরা। এতে যাত্রীরা যে-যেভাবে পারেন কামরা থেকে বেরিয়ে আসেন। এ সময় এক যুবক আগুনে আটকা পড়েন। তিনি বেশ কিছুক্ষণ আগুনের ভেতরেই দৌড়-ঝাঁপ করে বাঁচার চেষ্টা চালান। তবে শেষ পর্যন্ত আর পারেননি।

 

আগুনের এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া দগ্ধ ৮ জনের শরীরের ৯ শতাংশ পুড়ে গেছে। সবারই শ্বাসনালী পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন।

 

আরও খবর

Sponsered content