সারাদেশ

কলা বিক্রি করতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার কিশোরী, ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা

কুমিল্লা দেবিদ্বারে ৮মাসের অন্তস্বত্বা ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরীকে নিয়ে তার পরিবার ধর্ষকের হুমকির মুখে নিরাপত্তাহীনতায় মানবেতর জীবন যাপন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার দুপুরে এলায় সরেজমিনে গিয়ে চাঞ্চল্যকর ওই ঘটনার লোমহর্ষক বর্ণনা পাওয়া যায়। ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত এরশাদ মিয়া(৪০) উপজেলার ছোটশালঘর গ্রামের (ব্যাপারী বাড়ির) মৃত আঃ সালাম এর পুত্র। সে পেশায় একজন ব্যবসায়ী।

 

এ ঘটনার বিষয়ে ভিক্টিম কিশোরী (১৩) জানান, গত আট মাস আগে তার মা তাকে সৈয়দপুর বাজারে কলা বিক্রির জন্য পাঠান। বাজারে এরশাদ মিয়া নামে এক ব্যবসায়ী (ভিক্টিমের প্রতিবেশী) এসে তার পুরো কলা ক্রয় করে নেয়, কলার দাম দিতে তার নিজস্ব ডেকোরেটর দোকানে নিয়ে যায়। দোকানে নিয়ে মুখ বেঁধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।

এ ঘটনা কাউকে বললে তাকে হত্যা করারও হুমকি দেয়। ভিক্টিম কিশোরী ওই ঘটনা মা-বাবাসহ কাউকে জানায়নি। ঘটনার ৭ মাস পর ভিক্টিমের শারীরিক অবস্থার পরিবর্তনে সন্দেহ হলে তাকে গত ২৬ এপ্রিল দেবীদ্বার টাওয়ার হসপিটালে এনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসক জানান, সে ৭ মাসের গর্ভবতী। বিষয়টি নিয়ে এরশাদের সাথে পারিবারিকভাবে কথা বলায় এরশাদ তাদের বিষয়টি গোপন রাখতে বলে এবং আইন আদালতের আশ্রয় নিলে পুরো পরিবারকে হত্যার হুমকি দেয়।

ভিকটিমদের বড় ভাই (উজ্জ্বল হাজারি) জানান, ঘটনার পর আমরা স্থানীয় ইউপি সদস্য আলম হাজারীর দারস্থ হই। তিনি আমাদের সমাধানের আশ্বাস দেন। তবে ঘটনা মিথ্যা অপবাদ অভিযোগ তুলে, অভিযুক্ত ব্যক্তির পক্ষে প্রতিদিন বিভিন্ন লোকজন হুমকি দিয়ে আসছে।

ভিক্টিম কিশোরীর মা জানান, ধর্ষকের পরিবার খুবই প্রভাবশালী এবং এদের সাথে এলাকার প্রভাবশালীরা থাকায় তাদের হুমকির মুখে আইনের আশ্রয় নিতে পারছিনা। প্রতিদিন অসংখ্য লোকজন ঘটনা জানতে এবং শোনাতে বাড়িতে ভিড় করছে। মানসম্মান ও মেয়ের নিরাপত্তার স্বার্থে গত শুক্রবার (১০ মে) কুমিল্লা কাজী পাড়ায় বড় মেয়ের বাসায় নিয়ে যাই। আমার মেয়ের বাসায়ও গত শনিবার (১২ মে) এরশাদ একদল সন্ত্রাসী নিয়ে মেয়ের বাসার দরজা ধাক্কা ধাক্কা এবং লাথি মেরে দরজা খোলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে আমার মেয়েকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসে।

ওরা ভয়ে দরজা না খুলে বাসায় কান্নাকাটি করলে, এরশাদ তার লোকবল নিয়ে চলে যায়। যাওয়ার সময় এরশাদ মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়, অন্যথায় বড়ধরনের ক্ষতি করবে বলে জানিয়ে আসে। আমার বড় মেয়ে তার কর্মস্থল থেকে এসে আমার ছেলের (উজ্জ্বল হাজারীর) সাথে পরামর্শ করে ওই দিন (১২ মে শনিবার) বিকেলে মেয়েকে (ভিক্টিম) বাড়িতে নিয়ে আসি। আমরা সামাজিক নিরাপত্তার স্বার্থে অন্যত্র আশ্রয় নিতে পারছিনা, সমাজপতিরাও সমাধান দিচ্ছেনা, পুলিশ-আইন-আদালতের আশ্রয় নিতে পারছিনা। ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা মেয়েসহ পুরো পরিবার নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় আছি।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আলম হাজারীর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, অভিযুক্ত এরশাদ ধর্ষণের দায় অস্বীকার করায় ভিক্টিমের পরিবারকে আইনের আশ্রয় নিতে পরামর্শ দিয়েছি। ধর্ষকের একাধিক স্ত্রী এবং ভিক্টিমের সমবয়সি মেয়েও আছে। সে খুবই সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক। এ ঘটনার বিষয়ে থানা পুলিশকে জানিয়েছি। ঘটনার বিষয়ে অভিযুক্ত এরশাদ পলাতক থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করা করা সম্ভব হয়নি।

দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ নয়ন মিয়া জানান, ঘটনার শোনার পর ধর্ষককে গ্রেফতারে একাধিক টিম কাজ করছে। এ বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আরও খবর

Sponsered content