সারাদেশ

প্রবাসীর বিরুদ্ধে স্ত্রীর জরায়ুতে মরিচ দিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ

দীর্ঘ দুই বছর প্রবাস জীবন থেকে বাড়ীতে এসে যৌতুকের জন্য মারধর পরবর্তী স্ত্রীর জরায়ুতে মরিচ ভেঙ্গে দিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে স্বামী শফিকের বিরুদ্ধে। নোয়াখালী হাতিয়া উপজেলার সোনাদিয়া ইউনিয়রে ৯নং ওয়ার্ড দক্ষিণ সোনাদিয়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) এঘটনায় ভোক্তভুগী নারী বাদী হয়ে যৌতুক নিরোধ আইনে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে সে উপজেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

 

অভিযুক্ত স্বামী মো. শফিক (৩০) সোনাদিয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড দক্ষিন সোনাদিয়া গ্রামের দুলাল উদ্দিনের ছেলে।

 

নির্যাতনের শিকার শারমিন আকতার বলেন, দুই বছর আগে আমার স্বামী মো. শফিক বিদেশে যায়। এইদিকে তার তিন সন্তানকে নিয়ে তারই বাড়ীতে শ্বশুর শ্বাশুড়ীসহ দিনাতিপাত করছি। গত ১৫ মার্চ সে সে বিদেশ থেকে দেশে আসে।

 

কয়েকদিন পর আমা বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনতে বলেলে আমি অপরাগতা প্রকাশ করি। যার কারণে সে আমাকে বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন করে এবং আমার সাথে সংসার না করার সিদ্ধান্ত নেয়। মার্চের ১৯ তারিখ আমাকে মারধর করার পর আমি আইনের আশ্রয় নিতে চাইলে তারা সামাজিক ভাবে মান্যগণ্য ব্যক্তিদের নিয়ে বসে এমন অপরাধ আর না করার অঙ্গীকার করে। পরে আমাকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়।

 

কিন্তু বাড়িতে নেয়ার পর গত সোমবার রাতে সে আমাকে মারধর করে এবং আমার জরায়ুতে কাঁচা মরিচ ভেঙ্গে দিয়ে দেয়। যার অসহ্য যন্ত্রণায় আজ দুইদিন আমি শারীরিক ও মানসিক ভাবে অসুস্থ্য হয়ে পড়ি। যন্ত্রনায় আমার চোখে কোন ঘুম নেই।

 

স্থানীয়রা জানান, ২০১৫ সালে জাহাজমারা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড বিরবিরি গ্রামের আবদুল হাসেমের মেয়ে শারমিন আক্তারের সঙ্গে সোনাদিয়া ইউনিয়নের দুলাল উদ্দিনের ছেলে মো. শফিক (৩০) এর পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ২টি ছেলে ও ১টি কন্যা সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন সময় শফিক যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে আসছে।

 

শারমিনের বাবা আবদুল হাসেম জানান, বিয়ের পর শফিককে কয়েক ধাপে টাকা দেয়া হয়েছে। তাদের সন্তানদের জন্য একটি গাভী গরু ও মাছের ট্রলার বানানোর সময় এক লাখ বিশ হাজার হাওলাত চাইলে তাও দেয়া হয়। তদুপরি সে বিদেশ যাওয়ার সময় একলাখ টাকা দাবি করলে সে টাকাও ধারদেনা করে তাকে দেয়া হয়েছে।

 

তাছাড়া বিয়ের সময় উপহার হিসেবে দেড় ভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার ও আসবাবপত্র দেয়া হয়েছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্য সে বিদেশ থেকে ফিরে এসে নতুন করে আবার তিন লাখ টাকা দাবি করলে আমি অপরাগতা প্রকাশ করি। যার কারণে সে সবসময় আমার মেয়েকে নির্যাতন করে।

 

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শফিকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি। তার স্বজনরা জানান সে হাতিয়ার বাহিরে অবস্থান করছেন।

 

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত মেডিকেল অফিসার ডা. ওয়াহিদুল হক জানান, ভিকটিমের বাম উরুতে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আর জরায়ুতে নির্যাতনের বিষয়ে গাইনী ডাক্তারের কাছে রেফার করা হয়েছে।

 

হাতিয়া থানা পরিদর্শক (তদন্ত) সুদ্বীপ্ত রেজা জানান, এ বিষয়ে থানায় কোনো অভিযোগ আসেনি, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।

 

আরও খবর

Sponsered content