সারাদেশ

যে কারণে নারীর মাথায় পিস্তল ঠেকালেন ডিবি কর্মকর্তা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসামি ধরতে গিয়ে নারী ও শিশুদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) বিরুদ্ধে। এ ঘটনার শহরজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। গত শুক্রবার সদর উপজেলার থলিয়ারা গ্রামে ঘটে যাওয়া এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জয়নাল আবেদীনকে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

 

এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ) জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রোববার বিকেলে তদন্তবিষয়ক চিঠি পেয়েছি। ইতোমধ্যে ডিবি পুলিশের পরিদর্শক, এসআই ও কনস্টেবলের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে।

 

থলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা ও সৌদি প্রবাসী নূরুল আলম নূরুর বিরুদ্ধে সদর উপজেলার বিশ্বরোড এলাকার আবদুল কুদ্দুস বাদী হয়ে মাসখানেক আগে সদর থানায় মামলা করেন। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, নূরুল আলম সৌদি আরব থেকে আবদুল কুদ্দুসের এক আত্মীয়ের সাড়ে ৮০০ গ্রামে স্বর্ণ আনেন।

 

কিন্তু পুরো স্বর্ণ বুঝিয়ে না দিয়ে কুদ্দুসকে মাত্র ৪০০ গ্রাম স্বর্ণ দেন। বাদীপক্ষ সদর থানার পরিবর্তে পুলিশের অন্য শাখা দিয়ে মামলাটি তদন্তের জন্য আদালতে আবেদন করেন। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য ডিবি পুলিশকে নির্দেশ দেন।

 

জানা যায়, ১০ মে নূরুল আলম বাড়িতে রয়েছেন এমন খবর পেয়ে ডিবি পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়িতে উপস্থিত নারীসহ অন্যদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে একজন পুলিশ সদস্য এক নারীকে লক্ষ্য করে পিস্তল তাক করেন।

 

তবে আসামি না পেয়ে পুলিশ সদস্যরা সেখান থেকে পরে চলে যান। তবে ওই দিনই নারীকে লক্ষ্য করে পুলিশ সদস্যের পিস্তল তাক করার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে চরম সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

 

এ বিষয়ে ঘটনার সময় উপস্থিত নুরুল আলমের ভাই সারোয়ার আলম আরটিভি নিউজকে বলেন, ‘সাদা পোশাকে আসা লোকজন বাড়িতে ঢুকেই আমার ভাই নূরুল আলমের খোঁজ করতে থাকেন।

 

ভাই বাড়িতে নেই বলা হলেও ডিবি পুলিশের সদস্যরা বিষয়টি মানতে চাননি। এ সময় পুলিশ সদস্যরা আমার ভাইয়ের স্ত্রী কন্যাসহ কয়েকজনকে মারধর করেন। এ সময় মোবাইল ফোনে ধারণ করা কিছু ভিডিও তারা মুছে দিয়ে যান।

 

সারোয়ার আলম আরও বলেন, ‘আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে স্বর্ণ সংক্রান্ত বিষয়ে মামলা হয়েছে। আমার ভাইকে ধরতে হলে কেন আমাদের বাড়িতে এভাবে হামলা করতে হবে, সেই প্রশ্ন আমার প্রশাসনের কাছে।

 

অভিযোগ অস্বীকার করে ডিবি পুলিশের এসআই রেজাউল করিম বলেন, ‘আসামির উপস্থিতির সংবাদ পেয়ে আমিসহ তিনজন সাদা পোশাকে থলিয়ারা গ্রামে অভিযান চালাই। দুজন বাড়িতে ঢুকেছিলেন। তখন আসামি বাসায় ছিলেন।

 

তাকে গ্রেপ্তার করতে গেলে বাড়ির নারীসহ অন্যদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে নারীদের সরিয়ে দিয়ে দরজার দিকে পিস্তল তাক করি। এর ভিডিও আছে। তারা আসামিকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেছেন।

 

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ঘটনার তদন্তে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

 

অভিযান করতে গিয়ে কোন পুলিশ সদস্য যদি কারও সঙ্গে অসদাচরণ করেন বা অন্যায়ভাবে শক্তি প্রয়োগ করেন তবে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

আরও খবর

Sponsered content