সারাদেশ

পেছনে দাঁড়াতে না দেওয়ায় ইমামকে মারধর

পেছনে দাঁড়াতে না দেওয়ায় ইমামকে মারধর

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে ইমামের পেছনে দাঁড়ানোকে কেন্দ্র করে এক প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে জামে মসজিদের ইমামকে বেদম মারধরের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত (১৯ মার্চ) মঙ্গলবার নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ঘিলাতলী জামে মসজিদে জোহরের নামাজের সময় । সূত্রে জানা যায়, ঘিলাতলী জামে মসজিদে জোহরের নামাজ পড়তে যান একই এলাকারই স্বনামধন্য আলেম মাওলানা মোহাম্মদ ইউনুছ। মাসয়ালা অনুযায়ী ইমামের পিছনে হাফশার্ট পরা মুসল্লিকে না দাঁড়িয়ে এক হাফেজকে ইমামের পেছনে দাঁড়ানোর অনুরুধ করেন তিনি।

 

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রভাবশালী আবদুস ছালাম তার মেয়ে, পুত্রবধূসহ আত্মীয়স্বজনদের ডেকে এনে মাওলানা ইউনুছকে মসজিদ থেকে টেনে হিঁচড়ে বাহিরে এনে বেদম মারধর করেন। এতে গুরুতর আহত হলে মাওলানা ইউনুছকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে তার অবস্থা অবনতি দেখে ডাক্তার তাকে তাৎক্ষণিক কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রেফার করেন।

 

হাসপাতালের বেডে শুয়ে মাওলানা ইউনুছ জানান, আমি ইসলামের দৃষ্টিতে ইমামের পেছনে একজন হাফেজকে দাঁড়াতে অনুরোধ করি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রভাবশালী আব্দুস সালাম তার আত্মীয়-স্বজনদের ডেকে এনে আমাকে বেদম মারধর করেন এবং ওই দিন জোহরের নামাজ জামাতে পড়তে দেননি মুসল্লিদের। ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে একজন আলেমের ওপর ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান সচেতন মহল।

 

এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সকল মসজিদের ইমাম, খতিব ও আলেমদের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার নাইক্ষ্যংছড়ি বাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ২য় তলায় প্রায় অর্ধশতাধিক খতিব ও ইমামগণের উপস্থিতিতে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা জামে মসজিদের খতিব মাওলানা ফরিদুল আলম।

 

প্রতিবাদ সভায় মারকাজুল ইসলামি দারুচ্ছুন্নাহ মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা জালাল উদ্দীন ফারুকী বলেন, যে ব্যক্তির কারণে জোহরের নামায জামাতের সহিত নামাজ আদায় করতে পারেনি তাকে তাওবা করা ছাড়া উপায় নেই এবং যে মহিলারা বেপর্দার সহিত মসজিদ থেকে একজন আলেমকে টেনে হিঁচড়ে এসে তার ওপর কিল, ঘুষি, লাথি মারে সে মহিলাদেরও তাওবা করা ছাড়া স্বামীর সংসার করতে পারে না।

 

উক্ত ন্যাক্কারজনক ঘটনার প্রতিকারে বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি প্রদানসহ কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন তারা। সভায় উপস্থিত আলেমগণ তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। সভা শেষে আলেম উলামা নির্যাতন প্রতিরোধে আল মারকাজুল ইসলামি দারুচ্ছুন্নাহ মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা জালাল উদ্দীন ফারুকীকে আহ্বায়ক করে নয় সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়।

 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা জামে মসজিদের খতিব মাওলানা ফরিদুল আলম, রুপনগর জামে মসজিদের খতিব মাওলানা নুরুল আমিন, উওর ছালামি পাড়া জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আব্দুল গফুর, মাওলানা নজির হোসাইন, মাওলানা নুরুল ইসলামসহ বিভিন্ন মসজিদের খতিব ও ইমামগণ।

 

এ ব্যাপারে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ওসি আবদুল মান্নানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি মোবাইল রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

 

আরও খবর

Sponsered content