সারাদেশ

ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য বিরামপুরে বিনা পয়সার হোটেল!

ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য বিরামপুরে বিনা পয়সার হোটেল!

আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় প্রতি সপ্তাহে এক দিন নিজের হোটেলে অসহায় গরীবদের বিনামূল্যে খাবার খাওয়ান বেলাল মল্লিক নামে এক ব্যবসায়ী। তিনি গত ১১ বছর ধরে তার হোটেলে আড়াই থেকে সাড়ে তিনশ অসহায় মানুষকে খাবার খাওয়াচ্ছেন। বেলাল মল্লিক দিনাজপুর বিরামপুর পৌরসভার থানাপাড়া ঈদগাহ মহল্লার বাসিন্দা।

 

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, বিরামপুর পৌরশহরের পল্লবীমোড়ে অবস্থিত হাজী হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টে ভিক্ষুক, প্রতিবন্ধী, মানসিক ভারসাম্যহীন, রিকশাচালক, দিনমজুরসহ আশপাশের অনেকেই এসেছেন খাবার খেতে।

 

খাবারের তালিকায় সাদা ভাত, গরুর মাংস, মুরগির মাংস, ছোট মাছ, সবজি, ডাল এবং মাঝেমধ্যে খিচুড়িও থাকে। বৃহস্পতিবার ছাড়াও যে কোনো সময় কোনো ক্ষুধার্ত মানুষ তার হোটেলের সামনে দাঁড়ালে সবার আগে তাকে ডেকে পেট ভরে খাবার খাওয়ায়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি হোটেল কর্মচারীরাও সযত্নে এসব ক্ষুধার্তদের সেবা করেন।

 

খাবার খেতে আসা বৃদ্ধ শফিক বলেন, ‘আমার সন্তান নেই। তাই আমাকে কে খাওয়াবে আর কে কী করবে? বাধ্য হয়ে এই বয়সে মানুষের কাছে হাত বাড়িয়ে নিজের খাবার জোগাড় করি। প্রতিদিনের মতো সকালে পেটের দায়ে বাড়ি থেকে বেড় হয়ে শহরে এসেছি। সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়ে গেছে, ক্ষুধা লেগেছে। শুনেছিলাম, এ হোটেলে বিনা পয়সায় খাবার খাওয়ায় তাই এসেছি। হোটেলে ঢোকামাত্র ক্ষুধার্ত শুনে খাবার দেয়। এরপর থেকে বিরামপুরে এলে খাবার চিন্তা করতে হয় না।

 

বৃদ্ধা মমতাজ বিবি বলেন, ‘আমি গরিব। স্বামী-সন্তান কেউ এই দুনিয়াতে নেই। তাই আমি ভিক্ষা করে খাই। পেটে ক্ষুধা লাগলে আমি প্রায় এই হোটেলে চলে আসি। এখানে আমাদেরকে পেট ভরে খাবার দেয়, কোনও পয়সা নেয় না।

 

হোটেল মালিক বেলাল মল্লিক বলেন, প্রতি বৃহস্পতিবার আমার হোটেলে ২৫০-৩৫০ লোক বিনামূল্যে খাবার খায়। আমি লোক দেখানোর জন্য এগুলো করি না। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভে গরিব-অসহায়দের জন্য এই খাবারের ব্যবস্থা করি। এই কাজ করতে আমার আনন্দ লাগে। আমার হোটেলে প্রতিদিন ৫-৭ জন পাগল ফকিরকে খাবার খাওয়াই। এই হোটেলের আয় দিয়েও আমার সংসার চলে, আমার কর্মচারীদের চালাই।

 

আরও খবর

Sponsered content