সারাদেশ

ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণের নামে কয়েক কোটি টাকা প্রতারণা

ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণের নামে কয়েক কোটি টাকা প্রতারণা

ফেসবুক পেজে সিপিএ মার্কেটিংসহ বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণের আড়ালে প্রিমিয়াম সফটওয়্যার দেওয়ার কথা বলে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে একটি প্রতারণা চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে এন্টি টেররিজম ইউনিটের (এটিইউ) সাইবার ক্রাইম উইং।

 

তারা হলো শামীম আহম্মেদ (৩২), জাহিদুল ইসলাম (২৪), মাহিদুল হক ওরফে মাহাদী (৩০), আশরাফুল ইসলাম (২৬), এহসান মাশফী (২৪) ও রনি সরদার (২৮)। রাজধানীর উত্তরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ছয়টি এসএসডি কার্ড, চারটি হার্ডডিস্ক, চারটি ট্যাব, একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়।

 

বুধবার দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন ইটিইউর মিডিয়া কর্মকর্তা সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) ওয়াহিদা পারভীন। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানটির ফেসবুক পেজে সিপিএ মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে ঘরে বসে প্রথম দিন থেকে ১০ থেকে ৪০ ডলার আয়ের প্রলোভন দেখিয়ে চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন দেওয়া হতো। বিশ্বাস অর্জনের জন্য দেওয়া হতো ফেক ভিডিও রিভিউ ও পোস্ট।

 

বিজ্ঞাপনে তারা প্রচার করে সিপিএ ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্সের জন্য তারা প্রতি গ্রুপে ৩০০ জন করে লোক নেবে এবং এই কোর্সটি অনলাইনে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করাবে। এই বিজ্ঞাপনে কোর্সটি করার জন্য কীভাবে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে সেই সংক্রান্ত তথ্য দেওয়া থাকে। রেজিস্ট্রেশন করার পর নির্ধারিত সময়ে তাদের পাঠানো জুম লিংকের মাধ্যমে অনলাইন ক্লাসে যুক্ত করা হয়। ক্লাসে তারা অল্প সময়েই সিপিএ মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ টাকা আয়ের বিভিন্ন ধরনের লোভনীয় কথা বলতে থাকে।

 

পরবর্তীতে সিপিএ মার্কেটিংয়ের জন্য বিভিন্ন প্রিমিয়াম রাশিয়ান সফটওয়্যার টুলস প্লাগইন করার কথা বলে বিকাশের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ২৫০০ টাকা করে চাওয়া হয় এবং এই টাকা পরিশোধ করলে তাদের ক্লাসে অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলা হয়। আগ্রহী প্রশিক্ষণার্থীরা বিকাশে ২৫০০ টাকা পরিশোধ করলে তাদের সিপিএ মার্কেটিংয়র ওপর দায়সারাভাবে কিছু রেকর্ডেড ও কিছু লাইভ ক্লাস করানো হয়।

 

এছাড়া যেসব প্রিমিয়াম টুলসের কথা বলে তারা বিকাশে টাকা নেয় সেগুলো দেওয়া হয় না। প্রিমিয়াম সফটওয়্যার টুলসের নামে তারা কিছু ফ্রি সফটওয়ার সরবরাহ করে যা দিয়ে অংশগ্রহণকারীরা আয় করতে সক্ষম হয় না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কিছু ভুক্তভোগী তাদের মাধ্যমে অনলাইনে কিছু ডলার আয় করতে পারলেও ওয়েবসাইট আপডেটের কথা বলে অর্জিত ডলার কেটে রাখা হয়।

 

প্রতিষ্ঠার পরবর্তী দুই বছরে আপস্পট অ্যাকাডেমি সিপিএ মার্কেটিংয়ের উপর এভাবে ১৫৬টি ব্যাচের ট্রেনিং দিয়েছে যার প্রতিটিতে প্রায় ৩০০ জন করে অংশগ্রহণকারী ছিল। এভাবে প্রতারণামূলকভাবে প্রশিক্ষণার্থীদের কাছ থেকে তারা কোটি কোটি টাকা আয় করলেও প্রশিক্ষণার্থীরা তাদের দেওয়া প্রশিক্ষণ থেকে তেমন কিছুই আয় করতে পারেনি।

 

প্রিমিয়াম টুলস দেওয়ার নামে ২৫০০ টাকার অফারের মাঝে কেউ প্রথমে পুরো টাকা না দিয়ে আংশিক দিলে তাকে অনলাইন ক্লাস থেকে ব্লক করে দেওয়া হয় এবং সেই টাকা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আর ফেরত দেওয়া হওয়া না। এর মাধ্যমেও তারা হাতিয়ে নিয়েছে অনেক অর্থ।

 

আরও খবর

Sponsered content