সারাদেশ

রিকশাচালকের স্ত্রীকে চাকরি দিলেন প্রধানমন্ত্রী

রিকশাচালকের স্ত্রীকে চাকরি দিলেন প্রধানমন্ত্রী

বগুড়ায় রিক্সা চালিয়ে স্ত্রীকে মাস্টার্স পাস করিয়েছেন যুবক ফেরদৌস মন্ডল। বিষয়টি জানতে পেরে তার স্ত্রী সীমানুর খাতুনকে চাকুরী দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৫ জানুয়ারী সোমবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে বগুড়ার জেলা প্রশাসক মোঃ সাইফুল ইসলাম কালেক্টরেট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রাথমিক শাখায় সহকারী শিক্ষক পদে চাকুরীর নিয়োগপত্র তার হাতে তুলে দেন। এ সময় জেলা প্রশাসন থেকে ঘর সংস্কারের জন্য তিন বান্ডিল ঢেউটিন ও একটি ল্যাপটপ এবং তাদের ঋণ পরিশোধের দায়িত্ব নেন জেলা প্রশাসক।

 

বগুড়া জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বগুড়ার গাবতলী উপজেলা নশিপুর ঠিকাদার পাড়ার ফেরদৌস মন্ডলের লেখাপড়ার ইচ্ছা থাকলেও পারিবারিক কারণে কিশোর বয়সেই সংসারের হাল ধরতে হয়। প্রাথমিক স্কুল পেরিয়ে যাওয়ার পর অভাবের কারণে রিক্সা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে হতো।

 

একপর্যায়ে ফেরদৌস বিয়ে করেন বগুড়ার ধুনট উপজেলার নাংলু গ্রামের সীমানুর খাতুনকে। সে সময় তার স্ত্রী সীমানুর এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। নিজে লেখাপড়া করতে না পেরে স্ত্রীকে লেখাপড়া করান তিনি। রিকশা চালিয়েই স্ত্রীর ভরণপোষণ ও লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে যান।

 

স্বামীর রিক্সায় করেই কলেজে যেতেন সীমানুর খাতুন। সংসারে বাড়তি আয় করতে পড়ালেখার ফাঁকে করতেন দর্জির কাজও। এ অবস্থায় ধুনট কলেজ থেকে বিএ পাসের পর মাস্টার্স সম্পন্ন করতে ভর্তি হন বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী সরকারি আযিযুল হক কলেজে। ইসলামের ইতিহাস ও সংষ্কৃতি বিভাগ থেকে দ্বিতীয় বিভাগে মাস্টার্স পাস করে উচ্চশিক্ষার আশা পূরণ করেন সীমানুর।

 

রিক্সাচালক ফেরদৌস ও তার স্ত্রী সীমানুরের জীবনী নিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ পেলে তা প্রধানমন্ত্রীর চোখে পড়ে। বিষয়টি জেনে সীমানুরকে চাকরি দিতে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। এরই ধারাবাহিকতায় বগুড়ার জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম স্কুলশিক্ষকের নিয়োগপত্রটি প্রদান করেন।

 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মাদ আল মারুফ, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মেজবাউল করিম, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া, বগুড়া কালেক্টরেট পাবলিক স্কুল এ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক আল মামুন সরদার প্রমুখ।

 

বগুড়া জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, “নিয়োগপত্র পেয়ে গৃহবধূ সীমানুর খাতুন স্কুলে যোগদান করেন। একইসঙ্গে সীমানুরের স্বামী রিক্সাচালক ফেরদৌস মন্ডলকে ঋণ পরিশোধের জন্য ২৫ হাজার টাকা, বাড়ি সংস্কারের জন্য টিন ও একটি ল্যাপটপ দেওয়া হয়েছে।

 

আরও খবর

Sponsered content