সারাদেশ

ছুরি মেরে জেলে, বেরিয়েই খুন ছাত্রলীগ কর্মী

ছুরি মেরে জেলে, বেরিয়েই খুন ছাত্রলীগ কর্মী

বগুড়া সদরে আরিফ মণ্ডল (২০) নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে শহরের নামাজগড়ে এ ঘটনা ঘটে। আরিফ বগুড়া পৌরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর জহুরুল হকের প্রথম স্ত্রীর ছেলে। মা তৈরণ বেগমকে নিয়ে শহরের সুলতানগঞ্জ পাড়ায় থাকতেন আরিফ। জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সজীব সাহা বলেন, ‘পদ-পদবি না থাকলেও আরিফ কর্মী হিসেবে সব কর্মসূচিতে সক্রিয় ছিলেন। দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।

 

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, অক্টোবরের শুরুতে বাগ্‌বিতণ্ডার জেরে শহরের খাঁ পাড়ার মিলু রহমানের ছেলে সাকিবকে ছুরি মেরে আহত করার অভিযোগ ওঠে আরিফের বিরুদ্ধে। পরে সদর থানায় হত্যাচেষ্টা মামলায় পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। গত ২৫ নভেম্বর জামিনে বের হন তিনি।

 

কান্নাজড়িত কণ্ঠে আরিফের মা তৈরণ বেগম বলেন, ‘ছেলের পরিচিতরাই তাকে খুন করেছে। সবার সামনে হত্যা করলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। সাকিবকে সে ছুরিকাঘাত করেনি। মীমাংসার জন্য তাকে নিয়ে গিয়েছিল। ওরা এভাবে ছেলেকে মেরে ফেলবে জানলে জেল থেকে বেরই করতাম না।

 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে দুই বন্ধু নাইম ও নাফিকে নিয়ে সুলতানগঞ্জ পাড়া ঈদগাহ মাঠের সামনে দোকানে আড্ডা দিচ্ছিলেন আরিফ। এ সময় সাকিবের নেতৃত্বে ৮-১০ যুবক এসে আরিফকে ধাওয়া করে নামাজগড় এলাকায় ধরে ফেলে। কুপিয়ে ও গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিতের পর পালিয়ে যায় তারা।

 

র‌্যাব-১২ বগুড়ার কোম্পানি কমান্ডার (এসপি) মীর মনির হোসেন জানান, প্রাথমিক তদন্তে পূর্ববিরোধের জেরে আরিফকে হত্যার তথ্য পাওয়া গেছে। সন্দেহভাজন হিসেবে আরিফের বন্ধু নাইম, নাফি, মূল অভিযুক্ত সাকিবসহ চারজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। নাইম ও নাফির সামনেই আরিফকে ধাওয়া করে সাকিব। হামলার আগে-পরে দু’জনই সাকিবের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেছে। বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়েও তাদের ধরা সম্ভব হয়নি। নাইম ২০১৯ সালের আগস্টে নুরুল ইসলাম ভোলা হত্যার প্রধান আসামি।

 

ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা একটি হাঁসুয়া, ১০টি ধারালো অস্ত্র ও জিআই পাইপ জব্দ করে পুলিশ। সদর থানার ওসি সাইহান অলিউল্লাহ জানান, বুধবার বিকেলে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে (শজিমেক) ময়নাতদন্ত শেষে আরিফের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।

 

পুলিশ আরও জানায়, গত বছর অক্টোবরে বগুড়া জেলা পরিষদ নির্বাচনের সময় নৌকার পক্ষে নিয়ে আরিফ উপশহরে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের প্রচারে বাধা দেয়। এ সময় ছুরিকাঘাতে তার ডান পায়ের রগ কেটে যায়। এ ছাড়া গত ২৮ জানুয়ারি বগুড়া শহরে ক্রিকেট খেলা নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডার জেরে আরিফের ডান পায়ে ছুরিকাঘাত করে দুর্বৃত্তরা।

 

এদিকে গতকাল দুপুর ১২টার দিকে বগুড়ার শাজাহানপুর থেকে অটোরিকশাচালক আপেল মাহমুদের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। উপজেলার মাদলা ইউনিয়নের নন্দগ্রামের আলুক্ষেত থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। আপেল জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার ফুলবাড়ী গ্রামের মৃত পিন্টু মিয়ার ছেলে। তিনি বগুড়া শহরের নারুলী মধ্যপাড়ায় নানাবাড়িতে থাকতেন।

 

শাজাহানপুর থানার ওসি শহিদুল ইসলাম জানান, লাশের পাশে একটি রক্তমাখা ব্লেড পাওয়া গেছে। তার বুক, পেট ও পা ক্ষতবিক্ষত। আপেলের অটোরিকশা খোয়া গেলেও পকেটে ৩ হাজার ৪০০ টাকা ছিল। এটি ছিনতাই নাকি হত্যাকাণ্ড, তদন্ত করা হচ্ছে।

 

আরও খবর

Sponsered content