রাজনীতি

সংসদ নির্বাচন: জটিল হয়ে উঠেছে ১৪ দলীয় জোটের আসন ভাগাভাগি

সংসদ নির্বাচন: জটিল হয়ে উঠেছে ১৪ দলীয় জোটের আসন ভাগাভাগি

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী নির্ধারণে আজ বৃহস্পতিবার থেকে কাজ শুরু করবে আওয়ামী লীগ। তবে এখনো ক্ষমতাসীন ১৪ দলীয় জোটের শরিকদের মধ্যে আসন ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়নি।

 

দলগুলোর নেতারা বলছেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী নির্ধারণের পরেই জোটের আসন নিয়ে দর-কষাকষি শুরু হবে। তা ছাড়া, প্রধান প্রধান দল ও জোটগুলোতে এখনো ভাঙাগড়া চলছে। বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলোর কোনো কোনো দলছুট নেতাও ভোটে আসতে পারেন। তাঁদের জন্য আসনের ব্যবস্থা করতে হবে। সব মিলিয়ে এবার ক্ষমতাসীন জোটের মধ্যে আসন ভাগাভাগির বিষয়টি আগের চেয়ে জটিল হতে পারে।

 

১৪ দলীয় জোটের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের প্রার্থিতা চূড়ান্ত করার পর ২৬-২৭ নভেম্বরের দিকে জোটনেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জোটের প্রার্থিতা নিয়ে আলোচনা করা হবে। সেখানে জোটের শরিকদের কয়টি আসনে ক্ষমতাসীনেরা ছাড় দেবে, তা নির্ধারণ করা হবে।

 

তবে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলছেন, বর্তমান সংসদে শরিকদের যত প্রতিনিধি আছে তাদেরই কিংবা সংখ্যা ঠিক রেখে আসন পরিবর্তন করে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে ছাড় দেওয়া হতে পারে। তবে দু-একজন সংযোজন-বিয়োজন হতে পারে।

 

একাদশ জাতীয় সংসদে ১৪ দলীয় জোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির তিনজন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) তিনজন, জাতীয় পার্টির (জেপি) একজন এবং তরীকত ফেডারেশনের একজন সংসদ সদস্য রয়েছে।

 

এর মধ্যে নির্বাচনে ওয়ার্কার্স পার্টিকে চারটি আসনে ছাড় দেওয়া হয়েছিল কিন্তু ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে দলটির প্রার্থী বিএনপির কাছে পরাজিত হন। ওই আসনের উপনির্বাচনে জাতীয় পার্টির কাছে পরাজিত হয় ওয়ার্কার্স পার্টি।

 

সব মিলিয়ে বর্তমানে আওয়ামী লীগের শরিকদের আটটি আসন (সরাসরি) থাকলেও দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আসন ভাগাভাগি নিয়ে এখনো দলগুলো প্রাথমিক আলোচনা করেনি। জোটের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে জানা গেছে, শরিকেরা আওয়ামী লীগের কাছে ৩০টির বেশি চাইবে। এর আগে দশম জাতীয় সংসদে শরিকদের আসন ছিল ১৩টি। এবার সংখ্যা আরও বাড়াতে চায় দলগুলো।

 

১৪ দলীয় জোটের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র এবং আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু বলেন, জোটগত আসন নিয়ে এখনো আলোচনা হয়নি। জোটনেত্রী যখন সময় দেবেন তখনই এ নিয়ে আলোচনা হবে।

 

তবে এই বিলম্ব নিয়ে কিছুটা খেদ আছে সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়ার কণ্ঠে। তিনি  বলেন, ‘আমরা তো আসন ভাগাভাগি নিয়ে বৈঠক করার মালিক নই। যারা মালিক তারা তো করতে হবে।

 

আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে নানামুখী সমীকরণ হচ্ছে। এরই মধ্যে বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের শরিক কল্যাণ পার্টি নির্বাচনে আসার ঘোষণা দিয়েছে। ওই আন্দোলনের আরও কয়েকটি দলও নির্বাচনের পাইপলাইনে আছে।

 

আসন নিয়ে আলোচনার সমাধান হলে তারাও নির্বাচনে আসার ঘোষণা দিতে পারে। এ ক্ষেত্রে ২৮ ও ২৯ নভেম্বরের মধ্যে নতুন নতুন নির্বাচনী জোটের ঘোষণা আসতে পারে। আবার বিএনপির অনেক দলছুটও বিভিন্ন দলে যুক্ত হতে পারেন। সে ক্ষেত্রে নির্বাচনী জোটের আসন ভাগাভাগির বিষয়ে নতুন মেরুকরণ হতে পারে।

 

এ নিয়ে জোটের এক নেতা বলেন, জোটের পুরো বিষয়টিই জটিল হয়ে আছে। কতটি দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে, কতজন কতভাবে সমঝোতা মাধ্যমে, জাতীয় পার্টি এখন একটা বলছে, আবার আরেকটা বলছে, এগুলোর কোনো ঠিক নেই।

 

সবকিছুই মিলিয়ে দেখতে হবে কী অবস্থায় দাঁড়ায় নির্বাচনে অংশ নেওয়া দলের সংখ্যা। ফলে জোটের শরিকদের আসন ভাগাভাগির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে কয়েক দিন সময় লাগবে। তবে ২৮-২৯ নভেম্বরের মধ্যেই সেটা ঠিক হয়ে যাবে বলে মনে করেন ওই নেতা।

 

জোটের শরিকদের মধ্যে অনিবন্ধিত বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) তিন নেতা ও গণ আজাদী লীগের এক নেতা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। এ ছাড়া নিবন্ধিত দলগুলোও মনোনয়নপ্রত্যাশীদের কাছে আবেদন ফরম বিক্রি করেছে।

 

সেখান থেকে প্রার্থী চূড়ান্ত করে কিছু আসনে জোটগত তথা নৌকা মার্কার প্রার্থী দেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগের কাছে দলগুলো পাঠাবে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন আসনে সাংগঠনিক ভিত দাঁড় করাতে দলীয় প্রতীকে প্রার্থী দেবে শরিকেরা।

 

জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার বলেন, ‘আসন ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনার জন্য আমরা বলেছি। প্রধানমন্ত্রীর সময় দিলেই আলোচনা হবে।

 

আরও খবর

Sponsered content