আন্তর্জাতিক

মোদিকে নিজ স্বার্থে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছেন আদানি বললেন রাহুল গান্ধী

মোদিকে নিজ স্বার্থে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছেন আদানি বললেন রাহুল গান্ধী

ভারতের প্রাচীন রাজনৈতিক দল কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধী বলেছেন, দেশ বর্তমানে একটি ‘গভীর যুদ্ধ’ প্রত্যক্ষ করছে। কারণ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ইচ্ছা হলো, আদানির একাধিপত্যের নাগপাশে দেশকে বেঁধে ফেলা। এ সময় রাহুল বলেন, এই প্রক্রিয়াকে বাধা দেওয়া কোনো অংশেই স্বাধীনতার সংগ্রামের চেয়ে কম নয়। গতকাল মঙ্গলবার সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধী বিরোধীদলীয় নেতাদের আইফোনে সরকারের নজরদারি প্রচেষ্টার বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে উল্লিখিত বিষয়ে কথা বলেন। রাহুল এ সময় অভিযোগ করেন, নরেন্দ্র মোদি আদানি গ্রুপের কর্ণধার গৌতম আদানির নিযুক্ত এবং তিনি (মোদি) আদানির জন্যই কাজ করেন।

 

রাহুল গান্ধী বলেন, ‘একসময় ভাবতাম, ক্ষমতার ক্রমে একটা র‍্যাঙ্কিং রয়েছে—যেমনটা বলে গণমাধ্যমের লোকজন—যে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ইত্যাদি। প্রথমে জনাব মোদি, দ্বিতীয় অমিত শাহ। কিন্তু বাস্তবে এই র‍্যাঙ্কিং কিছুটা আলাদা। এক নম্বরে আসলে জনাব আদানি, দুই নম্বর মোদি এবং তিন নম্বরে অমিত শাহ। দেশবাসী শিগগিরই বুঝতে পারবে যে প্রধানমন্ত্রী জনাব আদানির নিয়োগ করা লোক এবং তিনি আদানির জন্যই কাজ করেন।

 

কংগ্রেসের সাবেক এই সভাপতি অভিযোগ করেন, মোদি ভারতকে আদানির একাধিপত্যের নিগড়ে বন্দী করতে কাজ করছেন। রাহুল বলেন, ‘ভারতকে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দাস করা হয়েছিল। এখন আমরা আদানির একচেটিয়া দাস। বিমানবন্দর, বন্দর, পরিকাঠামো, রেলপথ, খাদ্যগুদাম, ডেটা, সিমেন্ট, বিদ্যুৎ…সবকিছুই আদানির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

 

ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ইডি, সিবিআইও আদানির নিয়ন্ত্রণে বলে অভিযোগ করেন রাহুল। তিনি বলেন, ‘এমনকি ইডি ও সিবিআইও আদানির নিয়ন্ত্রণে। মুম্বাই বিমানবন্দর তার প্রমাণ। ইডি-সিবিআই ব্যবহার করে মুম্বাই বিমানবন্দর দখল করে নেন আদানি।

 

আদানির একচেটিয়া সবাইকে প্রভাবিত করে। গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই একাধিপত্যের কারণে অনেক প্রতিষ্ঠানই পঙ্গু হয়ে গেছে। এই একচেটিয়াতন্ত্রের কারণেই গণমাধ্যম প্রশ্ন করে না। সব জায়গায় “আদানি ট্যাক্স” আছে—আপনি বিদ্যুৎ, ট্রেন, গ্যাস যা-ই ব্যবহার করেন না কেন, তার সবটাতেই। আর বিজেপির আর্থিক ব্যবস্থাও আদানির সঙ্গে যুক্ত।

 

সংবাদ সম্মেলনের পর এক টুইটে রাহুল গান্ধী বিরোধী নেতাদের ফোনে নজরদারির প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘জিতনি জাসুসি কারনি হ্যায়, কার লো। হাম ডারনে ওয়ালে নেহি, লাড়নে ওয়ালে হ্যায়।’ অর্থাৎ, যত নজরদারি/গুপ্তচরবৃত্তি করা দরকার করে নেন। আমরা ভয় পাওয়ার লোক নই, লড়াই করার লোক।

 

উল্লেখ্য, ভারতের বেশ কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় বিরোধী নেতা অভিযোগ করেছেন, সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় তাঁদের আইফোনে দূর থেকে নজরদারি করার চেষ্টা করেছে হ্যাকাররা। আইফোনের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাপল আবার বিষয়টি তাঁদের সতর্কবার্তা পাঠিয়ে জানিয়েছে। ওই নেতারা অ্যাপলের পাঠানো সেই মেসেজের স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) শেয়ারও করেছেন।

 

অভিযোগকারী এসব নেতার মধ্যে রয়েছেন—শিব সেনার (উদ্ধব ঠাকরে) এমপি প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী, তৃণমূল কংগ্রেসের মহুয়া মৈত্র, আম আদমি পার্টির রাঘব চাড্ডা, কংগ্রেস নেতা শশী থারুর, দলটির গণমাধ্যম ও প্রচার বিভাগের প্রধান পবন খেরা। এ ছাড়া ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক সিতারাম ইয়েচুরিও একই ধরনের বার্তা পেয়েছেন। ভারতীয় বিরোধী দলগুলোর শীর্ষ নেতারা অভিযোগ করলেও অ্যাপল এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি।

 

আরও খবর

Sponsered content