রাজনীতি

বিএনপি কাকের মতো পাশ্চাত্যের দিকে তাকিয়ে আছে : তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ

বিএনপি কাকের মতো পাশ্চাত্যের দিকে তাকিয়ে আছে : তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, মির্জা ফখরুল সাহেবের বক্তব্যে মনে হচ্ছে— পশ্চিমা বিশ্বের অবস্থান যেমন ইসরায়েলকে সাহস যোগাচ্ছে, বিএনপিকেও তেমনই সাহস যোগাচ্ছে। দুটোর মধ্যে মিল আছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে বিএনপির আন্দোলনে কেউ সমর্থন জানায়নি। তিনি বলেন, ‘কাক যেমন কখন কে খাবারের উচ্ছিষ্ট ফেললো, সে দিকে তাকিয়ে থাকে, মির্জা ফখরুল সাহেবরাও তেমন পাশ্চাত্যের দিকে তাকিয়ে আছেন।

 

সোমবার (১৬ অক্টোবর) সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয়ে মতবিনিময়কালে সাংবাদিকরা বিএনপি মহাসচিবের মন্তব্য ‘যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বের অবস্থান বিএনপির আন্দোলনে সাহস যোগাচ্ছে’ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পশ্চিমা বিশ্বের অবস্থান স্পষ্টত ইসরায়েলকে সাহস যোগাচ্ছে। ইউরোপের যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, অস্ট্রিয়া এমনকি অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে কোনও মিছিল-সমাবেশ করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

 

অর্থাৎ মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে দমন করা হয়েছে। অর্থাৎ পশ্চিমা বিশ্বের অবস্থান একদিকে মানবতাবিরোধী অপরাধে লিপ্ত ইসরায়েলকে সাহস যোগাচ্ছে, আরেকদিকে মির্জা ফখরুল সাহেব বলছেন— তাদেরকেও সাহস যোগাচ্ছে। কিন্তু বিএনপির আন্দোলনে কারও সমর্থন নেই।

 

বিএনপির বিদেশনির্ভরতার প্রতি ইঙ্গিত করে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণের ওপর বিএনপির কোনও আস্থা নেই। সে জন্যই জনগণের দিকে না তাকিয়ে বিএনপি এখন কাকের মতো দূর দেশ থেকে কে কী বললো, সে দিকে তাকিয়ে থাকে।

 

কাক যেমন কখন কে খাবারের উচ্ছিষ্ট ফেললো, সে দিকে তাকিয়ে থাকে, মির্জা ফখরুল সাহেবরাও তেমন পাশ্চাত্যের দিকে তাকিয়ে আছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব এবং অন্যান্য দেশের সঙ্গে আমাদের অত্যন্ত সুসম্পর্ক। মির্জা ফখরুল সাহেবরা এগুলো বলে তাদের কর্মীদের একটু চাঙ্গা রাখার চেষ্টা করছেন মাত্র।

 

নির্বাচনের আগে সংলাপের জন্য বিদেশি পরামর্শ প্রসঙ্গে ড. হাছান বলেন, ‘ক্ষমতার মালিক জনগণ। আমরা জনগণের শক্তিতে বলীয়ান। জনগণই এ দেশের মালিক, জনগণই নির্ধারণ করবে— কারা দেশ পরিচালনা করবে, কারা দেশ পরিচালনা করবে না। বন্ধু রাষ্ট্রের যেকেউ যেকোনও পরামর্শ দিতে পারে।

 

দেশ আমাদের, দেশের মালিক জনগণ এবং দেশের জনগণ কী চায়— সেটি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তারা পরামর্শ দিতে পারে। সে পরামর্শ গ্রহণ করবো কী করবো না, সেটি আমাদের এখতিয়ার। তবে বিএনপির শেখ হাসিনার পদত্যাগ, সংসদ বাতিল, তত্ত্বাবধায়ক সরকার করতে হবে— এ সব শর্ত দিয়ে কখনও সংলাপ হতে পারে না।

 

নির্বাচনকালীন সরকার গঠন বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের কোনও প্রয়োজনীয়তা বা বাধ্যবাধকতা নেই। চলতি সরকারই নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করবে। নির্বাচনকালে বর্তমান মন্ত্রিসভার পুরোটাই থাকবে, নাকি সেটি ছোট কিংবা বড় করবেন, সেটি প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার।

 

ফিলিস্তিনের বিষয়ে বিএনপির নীরবতা নিয়ে প্রশ্নে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ইসরায়েলে পাখি শিকারের মতো করে ফিলিস্তিনিদের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। যুদ্ধের কথা বলে পুরো গাজা উপত্যকায় খাদ্য, পানীয়, জ্বালানি, বিদ্যুৎ সবকিছু বন্ধ করে দিয়েছে। এমনকি হাসপাতালেও বোমাবর্ষণ করছে। মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।

 

প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘে দাঁড়িয়ে ফিলিস্তিনিদের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছেন। আমি সরকারের তথ্যমন্ত্রী হিসেবেও এই বর্বরতা বন্ধের ব্যাপারে বক্তব্য রেখেছি এবং এটির সমালোচনা করে সরকারের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে।

 

তিনি বলেন, ‘বিএনপি এবং জামায়াত যখন নির্বাচন আসে, তখন কড়া মুসলমান হয়ে যায় এবং আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নানা ধরনের কথা বলে। অথচ আজকে যখন মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে, সেটি নিয়ে তারা নিশ্চুপ। একটি বৃহৎ শক্তি নাখোশ হতে পারে, সে কারণে নিশ্চুপ থেকে বিএনপি প্রকৃতপক্ষে এই বর্বরতা, নির্মমতা, যুদ্ধাপরাধের পক্ষ নিয়েছে এবং ইসরায়েলের পক্ষ নিয়েছে। দেশের জনগণ এদেরকে চিনে রাখবে।

 

আরও খবর

Sponsered content