আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিমরা কেমন আছে

যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিমরা কেমন আছে

২০০১ সালে ১১ সেপ্টেম্বরের ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ২২ বছর অতিবাহিত হয়েছে। এতে প্রায় তিন হাজার লোক নিহত হয়েছিল। বদলে দিয়েছিল অসংখ্য মানুষের জীবন। যুক্তরাষ্ট্রসহ সারা বিশ্বের মুসলিমদের জীবনকে চরমভাবে প্রভাবিত করেছিল এ ঘটনা।

 

তবে এই ভয়াবহ দীর্ঘ দুই যুগের বেশি সময় পরও বিচিত্র অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে মুসলিমদের যেতে হচ্ছে। কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনসের (সিএআইআর) তথ্য অনুসারে, সেপ্টেম্বরের ঘটনার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনেক মুসলিম ও মসজিদ হামলা ও হয়রানির শিকার হয়েছে।

 

দীর্ঘ দুই যুগ পরও মুসলিমদের বিরুদ্ধে বৈষম্য ও ঘৃণা অব্যাহত রয়েছে এবং ইসলামফোবিয়া ও বর্ণবাদের দেশটির কাঠামোর অংশ হয়ে উঠেছে বলে জানিয়েছেন সিএআইআর ক্যালিফোর্নিয়ার প্রধান হুসাম আয়লুশ। তিনি বলেন, ‘ক্যালিফোর্নিয়ায় প্রায় ১০ লাখ মুসলিম বসবাস করেন।

 

এখানকার পাবলিক স্কুলে পড়া ৫০ শতাংশের বেশি মুসলিম শিক্ষার্থীকে শুধুমাত্র মুসলিম হওয়ার কারণে নানা ধরনের মৌখিক ও শারীরিক নির্যাতনের সম্মুখীন হতে হয়।

 

আমেরিকান কাউন্সিল অব ইসলামিক অর্গানাইজেশনের মহাসচিব উসামা জামাল বলেন, ‘আমেরিকায় মুসলিম হিসেবে আমাদের সবার প্রথম দিকের বছরগুলো খুবই কঠিন ছিল। তবে বর্তমানে বিষয়গুলো একদম বদলে গেছে। বরং নতুন প্রজন্ম ভয়াবহ এই হামলার ঘটনা সম্পর্কেও অনেক ক্ষেত্রে জানে না।

 

অবশ্য আমেরিকার মুসলিমদের এ ঘটনার পর অনেক সংকটকাল অতিবাহিত করতে হয়েছে। এখন তারা তা সব প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে নিজেদের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার চেষ্টা করছে। কারণ আমরা সমাজের সবার জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই।

 

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা ওই বোনদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি, যারা হিজাবের মাধ্যমে ইসলামের প্রতীককে সবার সামনে তুলে ধরছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সমাজে মুসলিমদের ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে।

 

কারণ মুসলিমরা নিজ সন্তানদের ভালোভাবে শিক্ষিত করতে আগ্রহী। তা ছাড়া বড় কম্পানি ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে তাদের কাজের সুযোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সমাজের যেকোনো সমস্যা সমাধানে তারা অনেক বেশি সম্পৃক্ত থাকে।

 

উসামা জামাল বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্য ও কাউন্সিলসহ বিভিন্ন নির্বাচনে মুসলিমরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অবশ্য আগে এমন পরিস্থিতি ছিল না। এখানে বাস্তবতার নিরিখে সব কিছু নির্ধারণ করতে হয়। অনেকে মুসলিমদের ওপর অতিরিক্ত নজরদারির অভিযোগ করেন।

 

মূলত আশির দশকের পর থেকে পড়াশোনা ও কর্মসূত্রে মুসলিম আগমনের সংখ্যা বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছিল। ফলে ২০০১ সালের ঘটনার পর কঠোর নজরদারিও বৃদ্ধি পায়।

 

কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনসের (সিএআইআর) তথ্য অনুসারে দেশটিতে বসবাস করা মুসলিমের সংখ্যা ৫০ লাখের কম হবে না। কেন্দ্রীয় নির্বাচনে এর বড় প্রভাব না থাকলেও স্থানীয় নির্বাচনে এর অনেক বড় প্রভাব রয়েছে।

 

আমেরিকানস ফর জাস্টিস ফর প্যালেস্টাইনের প্রেসিডেন্ট ওসামা আবু ইরশিদ বলেন, ‘১১ সেপ্টেম্বরের হামলা-পরবর্তী প্রতিক্রিয়া অনেক ভয়াবহ হলেও বর্তমানে ওই সব বাধা-বিপত্তি এখন আর নেই; বরং তা অতিক্রম করে মার্কিন মুসলিমরা এখন নানা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। আগে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে মুসলিমদের অংশগ্রহণ ছিল না।

 

কিন্তু বর্তমানে কংগ্রেসের সদস্য, রাজনৈতিক কর্মী, বিচারক, আইনজীবীসহ যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় সব ক্ষেত্রেই মুসলিমদের অংশগ্রহরণ রয়েছে। তাই বাধাবিপত্তির চেয়ে মুসলিমদের এসব অর্জন বহুগুণ বেশি।

আরও খবর

Sponsered content