রাজনীতি

বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যরা অর্থ পাচার বা গায়ের জোরে প্রতিষ্ঠিত নয় বললেন ওবায়দুল কাদের

বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যরা অর্থ পাচার বা গায়ের জোরে প্রতিষ্ঠিত নয় বললেন ওবায়দুল কাদের

বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যরা সবাই মেধার জোরে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন, গায়ের জোর, লুটপাট, দখল বা অর্থ পাচার করে নয়। এই পরিবার সততার প্রতীক। প্রত্যেকেই সততার আদর্শে উজ্জীবিত। এমনটাই মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

 

আজ সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সভায় বঙ্গবন্ধুর পরিবার শতভাগ পরীক্ষিত উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তাদের পরীক্ষা করে লাভ নেই।

 

আজকের রাজনৈতিক কর্মীরা, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ মানেন না, সততা মানেন না, নির্দেশনা মানেন না, জীবন দর্শন থেকে শিক্ষা নেন না—আর দাবি করেন, আপনারা বঙ্গবন্ধুর সৈনিক! এই দাবি কেন করেন? সৈনিক হলে চরিত্রবান হতে হবে, সৎ হতে হবে।

 

আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা প্রতি ইঙ্গিত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের নেত্রী কেমন জীবনযাপন করেন। আপনারা কি দেখেন না? রাত ২টায় আপনি ফোন করেও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে পান, এটা অবাক বিষয়। তিনি ৩ থেকে সাড়ে ৩ ঘণ্টা ঘুমান, বাকি সময় দেশের কথা ভাবেন। বঙ্গবন্ধুর যোগ্য উত্তরসূরি শেখ হাসিনা। এ দেশে দুজন মানুষ মৃত্যুর পরও বেঁচে থাকবেন। একজন বঙ্গবন্ধু, আরেকজন শেখ হাসিনা।

 

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা। আমরা কী শিখব তাঁর কাছে? আমাদের রাজনীতি, আমরা কীভাবে শিক্ষা গ্রহণ করব? রাজনীতিতে যে যোগ্যতা প্রয়োজন, তা কীভাবে অর্জন করব? আমি বলব, এ দেশে বঙ্গবন্ধুর পরিবারই সবচেয়ে বড় আদর্শের জায়গা।

 

সততা, সাহস রাজনীতির প্রধান দুটি গুণ। সততা শিখবেন, সাহস জানবেন—বঙ্গবন্ধুর পরিবারের দিকে তাকান, বঙ্গবন্ধুর দিকে তাকান, শেখ হাসিনার দিকে তাকান, শেখ রেহানার দিকে তাকান, সজীব ওয়াজেদ জয়ের দিকে তাকান, সায়মা ওয়াজেদের দিকে তাকান।

 

এ সময় ওবায়দুল কাদের বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে নির্দেশ করে বলেন, ‘একটি পরিবার ক্ষমতায় থেকেও গত ১৫ বছরে ক্ষমতার কোনো বিকল্প সেন্টার করেনি। এখানে হাওয়া ভবন নেই, এই দেশে কোনো হাওয়া ভবন নেই। ১৫ বছরেও অলটারনেটিভ পাওয়ার সেন্টার এ দেশে কেউ করেনি।

 

লেখা-পড়া করেছে অক্সফোর্ড, হার্ভার্ডে। এই পরিবারের সন্তানেরা মেধাবী। যে যেখানে আছে, সেখানে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে মেধা দিয়ে, গায়ের জোরে নয়, লুটপাট করে নয়, দখল করে নয়, অর্থ পাচার করে নয়। এই পরিবার সততার প্রতীক। প্রত্যেকেই সততার আদর্শে উজ্জীবিত।

 

সজীব ওয়াজেদ জয়ের বাংলাদেশে গমনাগমনের প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নীরবে আসে, নিঃশব্দে চলে যায়। কেউ টেরও পায় না। কিন্তু তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশে একটা নিঃশব্দ বিপ্লব হচ্ছে—আইসিটি বিপ্লব। এই বিপ্লবরে স্থপতি জয়। তাঁর প্রয়োজনীয় কাজ সেরে নীরবে আবার চলে যাচ্ছে, কোনো সাড়া-শব্দ নেই।

 

এই হচ্ছে বঙ্গবন্ধু পরিবার। শেখ রেহানার লন্ডন শহরে নিজস্ব কোনো গাড়ি নেই, বাস-ট্রেনে যাতায়াত করেন। আমাদের নেত্রী বলেন, “সিম্পল লিভিং, হাই থিংকিং”। এই মেথডে কর্মীদের উজ্জীবিত হতে হবে। এটা বঙ্গবন্ধুর মূলমন্ত্র, আমাদের নেত্রীর বক্তব্য এবং তাঁর নির্দেশনা।

 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতার পিতার লাশ সিঁড়িতে পড়ে ছিল। গোপালগঞ্জে নিয়ে ৫৭০ সাবান আর রিলিফের কাপড়ে বঙ্গবন্ধুর দাফন হয়েছে। ১৮-১৯ জন লোককে জানাজা পড়ার অনুমতি দেওয়া হয়।

 

তাদের উদ্দেশ্য ছিল ঢাকা থেকে দূরে নিয়ে টুঙ্গিপাড়ায়—তখন রাস্তা-ঘাট ছিল না—অজপাড়াগাঁয়ে বঙ্গবন্ধুকে মাটিচাপা দিলে তাঁকে বাংলাদেশ ভুলে যাবে। তাদের হিসেবের অঙ্ক কত যে ভুল, আজ টুঙ্গিপাড়া বাঙালির তীর্থস্থান, ৩২ নম্বরে জনতার ঢল নামে। শুধু ১৭ মার্চ নয়, প্রতিদিনই বঙ্গবন্ধুর নামে সারা বাংলাদেশ থেকে ছুটে আসে অসংখ্য মানুষ।

 

বঙ্গবন্ধুকে ‘মানুষকে ভালোবাসার রাজনীতির স্রষ্টা’—আখ্যায়িত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তাঁর উত্তরাধিকার আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা বহন করে চলেছেন। চরিত্রহননের ছোড়া দিয়ে ৭৫-এর পর এই পরিবারকে কলঙ্কিত করা। এই পরিবারের চরিত্রহননের অনেক অপচেষ্টা জিয়াউর রহমান থেকে অনেকেই করেছে। নিষিদ্ধ করেছে বঙ্গবন্ধুকে—স্বাধীনতা দিবসে, বিজয় দিবসে। বিজয়ের মহানায়ক নেই, বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস আছে।

 

আরও খবর

Sponsered content