সারাদেশ

দেশ জুড়ে প্রশংসায় ভাসছে এনামুলের ধানখেতে ‘মা’ ভাস্কর্য

দেশ জুড়ে প্রশংসায় ভাসছে এনামুলের ধানখেতে ‘মা’ ভাস্কর্য

পৃথিবীর বুকে সব চেয়ে মধুর ও মমতাময়ী এক ডাকের নাম ‘মা’। হিন্দু-মুসলিম,বৌদ্ধ কিংবা খ্রিস্টান। অথবা ইহুদি যে কোন ধর্মের মানুষের কাছেই জীবনের সর্বোচ্চ ত্যাগ শীকারকারী ও মহাবিনয়ী এক নারীর অপর নাম মা। আর এই মাকে অনেকেই অনেক ভাবেই ভালবেসে থাকেন। কেউবা অনেকে মায়ের প্রতি ভালবাসা দেখাতে জীবনে অনেক আজব লঙ্কাকান্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে। যুগে-যুগে দেশ বিদেশে এমন অসংখ্য নিদর্শ রয়েছে। তবে এবার দেশের মাটিতে মায়ের প্রতি এক বিষ্ময়কর ভালবাসা দেখিয়েছেন তরুণ কৃষক এনামুল হক।

 

তিনি বেগুনি রঙের ফসলের মাঠে সেখানে দুই রঙের ধানগাছ দিয়ে ধানখেতের মাঝে ফুটিয়ে তুলেছেন হৃদয়ের মাঝে দুলা লাগানো এক অভূতপূর্ব সুন্দর “মা” ভাস্কর্য।

আর এই ভাস্কর্যের কথা ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ায় প্রশংসার জোয়ারে ভাসছেন তিনি।

জানা গেছে, গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বেকাশাহরা গ্রামের আবদুল আউয়ালের ছেলে কৃষক এনামুল।

পারিবারিক ভাবে স্ত্রী ও দুই ছেলে-মেয়ে নিয়ে তাঁর সংসার। কৃষি কাজের পাশাপাশি তিনি শ্রীপুর বাজারে পান-সুপারির ব্যবসা করেন।

২০২১ সালে তিনি নিজের আধা বিঘা জমিতে প্রথমবারের মতো বেগুনি রঙের ধান চাষ করেন। তখন এই রঙিন ধান দিয়ে ব্যতিক্রম কিছু করার ইচ্ছা জাগে।

সেই ভাবনা থেকেই পরের বছর ২০২২ সালে তিনি তার ধানখেতের মাঝে ‘মা’ শব্দের শস্যচিত্র করেছিলেন।

পরের বছর ২০২৩ সালে একই জমিতে গড়েন শস্যচিত্র ‘জাতীয় পতাকা’। এবার তিনি মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে গড়েছেন শস্যচিত্র ভালোবাসা।

অদম্য এই কৃষকের শস্য চিত্র দেখতে এখন শুধু গাজীপুরবাসীরাই নয়। আশেপাশের জেলা ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল থেকে প্রতি দিন দর্শনার্থী ছুটে আসছে এনামুলের ধান খেতে শস্যচিত্র দেখতে।

কেউবা বা ছবি তুলে নিচ্ছে আবার কেউবা ভিডিও ধারণ করে নিচ্ছে এ শস্য চিত্রের সৌন্দর্য।

টাঙ্গাইলের মির্জা পুর এলাকার থেকে এসেছেন যুবক মো.আমিনুল ইসলাম (২৫)। তিনি বলেন,জীবনে অনেক কথা শোনেছি।

তবে মাকে ভালবাসে ধান খেতে ভাস্কর্যের কথা শোনে আমি অভিভূত হয়ে পড়ি। তাই নিজ চোখে দেখতে এখানে এসেছি। তিনি আরও বলেন,এতে করে তরুণরা মায়ের প্রতি আরও ভালবাসা বাড়িয়ে দিবে।

কৃষক এনামূল হক বলেন, ২০২১ সালে তিনি নিজের আধা বিঘা জমিতে প্রথমবারের মতো বিভন্ন জাতের ধানের চাষ কারর জন্য। পরীক্ষা মূলক ভাবে বেগুনি রঙের ধান চাষ করেন।

তখন এই রঙিন ধান দিয়ে ব্যতিক্রম কিছু করার ইচ্ছা জাগে। তিনি বলেন,এর পরে প্রথম বার তিনি মায়ের প্রতি অকৃত্রিম শ্রদ্ধা ও ভালবাসার নির্দশ রাখতে ধানখেতের মাঝে ‘মা’ ভাস্কর করেন।

এতে ব্যাপক সাড়া পাওয়ায় এর থেকেই তিনি বিভিন্ন শস্যচিত্রের ভাস্কর্য ফুটিয়ে তুলছেন।

এ উদ্যোগের বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমাইয়া সুলতানা বলেন, ‘কৃষক এনামূলের শস্যচিত্রের কথা শুনেছি। এমন উদ্যোগ খুবই প্রশংসনীয়।

তিনি আরও বলেন,সারা দেশেই তরুণ কৃষকরা যদি এ ধরনের শস্য চিত্র গড়ে তুলেন। এক দিকে কৃষক ও কৃষির প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়বে। এর পাশাপাশি মায়ের প্রতিও আরও আনুগত্য বাড়বে তরুণদের।

আরও খবর

Sponsered content