13 March 2024 , 4:04:05 প্রিন্ট সংস্করণ
সিরাজগঞ্জে একটি স্কুলে অর্থ লেনদেনের ভিডিও ফাঁসের পর চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উল্লাপাড়ার গয়হাট্টা সালেহা ইসহাক উচ্চ বিদ্যালয়ে। প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে ম্যানেজিং কমিটির দুই সদস্যের অর্থ লেনদেন। সম্প্রতি, সেই ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ভিডিওচিত্রে শোনা যায়, একজন প্রধান শিক্ষকের উদ্দেশে বলছেন– ‘আপনি টাকাটা বিসমিল্লাহ বলে হাতে নেন..’
ঘটনার অনুসন্ধানে নামে যমুনা টেলিভিশন। কথা হয় অর্থ লেনদেন করা ম্যানেজিং কমিটির দুই সদস্য আইনুল হক ও মানিক মিয়ার সাথে।
প্রশ্ন ছিলো, কীসের টাকা লেনদেন করেছেন তারা? তাদের একজন বলেন, তিনটা নিয়োগ ছিল। সে দাবি করে টাকার। সেই টাকাই তাকে দিয়েছি।
আরেকজন বলেন, মাস্টার (প্রধান শিক্ষক) বলেছে, যদি আমাকে তিন লক্ষ টাকা একসঙ্গে দিতে পারেন, তাহলে এটা করব। নইলে করব না।
নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম। তার দাবি, ৩ লাখ টাকা ব্যক্তিগত পাওনা।
তাকে ফাঁসাতেই পরিকল্পিতভাবে ভিডিও ধারণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, এটা যদি নিয়োগের টাকা হতো, তাহলে অভিভাবক সদস্য কীভাবে আমাকে টাকা দেয়?
পাওনা টাকাই দিতে এসেছিল তারা। কম দিচ্ছিল, আমি নিতে অসম্মত ছিলাম। তাই হাতজোড় করে বারবার মাফ চেয়েছে তারা।
শহিদুল ইসলামকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে স্কুল ম্যানেজিং কমিটি। পাশাপাশি, প্রশাসনে দেয়া হয়েছে লিখিত অভিযোগ।
বিদ্যালয়টির সভাপতি আল আমিন বলেন, প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে রিসিটের (বিক্রয় রসিদ) মাধ্যমে বই বিতরণ করেছে সে।
আমরা এটার প্রতিবাদ করি এবং ম্যানেজিং কমিটি নোটিশ দিয়ে এর ব্যাখ্যা চায় তার কাছে। সে জবাব না দিয়ে উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা করেছে।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী-অভিভাবক। রহস্য উদঘাটনের দাবি তাদের। এক শিক্ষার্থী বলেন, শিক্ষকরা যদি ঘুষ খায়, তাহলে স্কুল চলবে কীভাবে? আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
অভিভাবকদের মুখেও অভিন্ন কথা। একজন অভিভাবক বলেন, তার বদলে অন্য কেউ প্রধান শিক্ষক হলে লেখাপড়ার আরও উন্নতি হবে।
বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিলেন ইউএনও। সিরাজগঞ্জ, উল্লাপাড়ার ইউএনও সানজিদা সুলতানা বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে। প্রয়োজন হলে আমরা এটিকে বিবেচনা করবো।
প্রসঙ্গত, ১৯৩৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় স্কুলটি। ২০১২ সালের ৮ জানুয়ারি প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান শহিদুল ইসলাম।