সারাদেশ

ইলিশ ছিনতাই মামলায় বরিশালের সাবেক দুই ছাত্রলীগ নেতা আটক

ইলিশ ছিনতাই মামলায় বরিশালের সাবেক দুই ছাত্রলীগ নেতা আটক

এবার ইলিশ বহনকরা গাড়িতে ছিনতাইয়ের মামলায় আটক হলেন বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক ছাত্রনেতা আরিফুর রহমান রিয়াজ ভূঁইয়া (৪০) এবং সোহেল হাওলাদার(৪০)। সোমবার (১২ মার্চ) রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে মেট্রোপলিটন বিমানবন্দর থানাধীন নগরীর ২৯ ওয়ার্ডের পশ্চিম ইছাকাঠী এলাকার কাশিপুর আনসার ক্যাম্প সংলগ্ন ভুঁইয়া বাড়ি থেকে তাদের দুজনকে আটক করে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ।

 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত অফিসার (এসআই) রিয়াজুল ইসলাম। তিনি জানান, মহাসড়কে পরিবহণ থেকে ইলিশ মাছ ছিনতাইয়ের মামলায় তাদের দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আশা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এবং উপরস্থ কর্মকর্তাদের অনুমতি ছাড়া এই মুহূর্তে তেমন কিছুই বলা যাচ্ছেনা।

 

রিয়াজ ভূঁইয়া এবং সোহেল হাওলাদার মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অসীম দেওয়ানের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। মামলা সূত্রে জানা যায়, গত (২৫শে জানুয়ারি) রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে গালাচিপা-ঢাকাগামী “ডলফিন এক্সপ্রেস লিমিটেড” নামক পরিবহনে ৩ হাজার ১শ কেজি ইলিশ মাছ ঢাকাসহ বিভিন্ন পাইকারি বাজারের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলো।

 

পথিমধ্যে নগরীর ২৫নং ওয়ার্ডে অবস্থিত দপদপিয়া সেতুর টোল প্লাজায় সোহেল এবং রথিসহ ৩০/৩৫ জনের একটি চক্র “ডলফিন এক্সপ্রেস লিমিটেড” পরিবহনে দেশীয় অশ্রু দিয়ে হত্যার ভয় দেখিয়ে নগদ অর্থ ছিনতাই করে চক্রের সদস্যরা।

 

এ ঘটনায় পটুয়াখলী জেলার গলাচিপা উপজেলার মাছ ব্যবসায়ী ইমন প্যাদা গত (২৫শে জানুয়ারি) কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি ছিনতাই মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-৪৬/(১) ২৪। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রিয়াজ ভুঁইয়ার এলাকার এক চা দোকানি জানান, সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতা যে মাদক বিক্রিতে জড়িত তা রাজনৈতিক এবং পুলিশের অনেক সদস্যই জানতেন।

 

কিন্তু ক্ষমতাসীন রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকা এবং প্রভাবশালী এক আওয়ামী লীগ নেতার স্নেহভাজন হওয়ায় তাঁকে আটক করতে পুলিশ সাহস দেখায়নি। কিন্তু এয়াবার আর তাঁর শেষরক্ষা হল না। শেষমেশ গ্রেপ্তার হলো সড়কে ছিনতাই মামলায়।

 

সূত্রে জানা যায়, রিয়াজ ভুঁইয়া গত বছরের (২১ ফেব্রুয়ারি) মঙ্গলবার মেট্রোপলিটন বিমানবন্দর থানাধীন নগরীর ২৯ ওয়ার্ডের পশ্চিম ইছাকাঠী এলাকা থেকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (এডি) এনায়েত হোসেনের নেতৃত্বে তাঁর বাসায় অভিযান পরিচালনা করে ১২ বোতল ফেন্সিডিলসহ তাকে গ্রেপ্তারে করা হয়েছিলো।

 

এর কিছুদিনের মধ্যেই তিনি জামিনে বের হয়ে বরিশাল যুবলীগের এক প্রভাবশালী নেতার ছত্র ছায়ায় বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে যেতেন বলেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।

 

বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক কমিটির এক নেতা জানান, রিয়াজ ভুঁইয়া মাদকসেবন করেন তা কে না জানে। তার বিরুদ্ধে মাদকসহ আটকের মামলাও রয়েছে এরপরও সে এতোদিন কীভাবে বরিশালের প্রভাবশালী এক আওয়ামী লীগ নেতার স্নেহভাজন হয়ে ঘুরে বেড়ায় সেইটা আমার বোধগম্য নয়।

 

ওই ছাত্রলীগ নেতা আরও জানান, রিয়াজ বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি হলেও স্থানীয় ওই আওয়ামী লীগ নেতার সকল কর্মসূচিতে অংশ নিতেন এবং তাঁকে যুবলীগের ব্যানারে রাজপথে নামতে দেখা যেতো এমনকি এখনও দেখা যায়।

 

নির্ভরযোগ্য এক সূত্র জানিয়েছে, রিয়াজ ছাড়াও বরিশাল মহানগর যুবলীগের সেই প্রভাবশালী নেতার ছত্রছায়ায় অনেক ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নামধারীরাও বরিশালে মাদক ও চাঁদাবাজির সাথে যুক্ত রয়েছে। তথ্যপ্রমাণ সহ সেই অনুসন্ধানীমূলক প্রতিবেদনটি দেখতে চোখ রাখুন।