এক্সক্লুসিভ

গ্রামীণ ঐতিহ্য ঢেঁকি এখন বিলুপ্তির পথে

গ্রামীণ ঐতিহ্য ঢেঁকি এখন বিলুপ্তির পথে

‘ও বউ ধান ভানেরে ঢেঁকিতে পার দিয়া, ঢেঁকি নাচে আমি নাচি হেলিয়া দুলিয়া ও বউ ধান ভানরে’। গ্রাম বাংলার গৃহবধূদের কণ্ঠে আগে প্রায়ই শোনা যেত এ ধরণের সুর আর ঢেঁকির ঢিপ ঢিপ শব্দ। ঢেঁকির তালে কত গান ও কত প্রবাদ গাওয়া হতো গ্রাম্য মেয়েদের। ঐতিহ্যবাহী সেই ঢেঁকি বিলুপ্তি প্রায়।

 

রবিবার (১৪ জানুয়ারি) সকালে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার লখন্ডা গ্রামের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় দেখা গেল গ্রাম বাংলার ঢেঁকির অপরূপ দৃশ্য। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এখনো হাতে গোনা দুই একটা গ্রামে দেখা মেলে এই এই কাঠের ঢেঁকির, তবে তা সংখ্যায় খুবই কম।

 

এলাকার বয়োজ্যেষ্ঠরা জানান, আগে মানুষের পৌষ পার্বণে একমাত্র ভরসা ছিল কাঠের ঢেঁকি। গ্রামে গ্রামে বাড়িতে বাড়িতে কান পাতলি ভেসে আসতো ঢেঁকিতে চাল কোটার শব্দ। ঢেঁকি শব্দ মুখরিত হতো এ পাড়া সে পাড়া। সে সব এখন শুধুই অতীত। প্রযুক্তির ছোঁয়ায় আর আধুনিকতার আদলে বিভিন্ন উন্নত মানের যন্ত্রপাতির কারণে হারাতে বসেছে এই ঢেঁকিতে চাল কোটার দৃশ্য।

 

দিয়া তালুকদার (৪৫) বলেন, ঢেঁকিতে চাল কোটা একটু কষ্ট কর। তবে ঢেঁকির চালকটা পিঠা অনেক সুস্বাদু হয়। গ্রামের মধ্যে শুধু এখন আমাদের বাড়িতেই কাঠের ঢেঁকি আছে। অন্যরা তো সবাই এখন হামান দিস্তা বা চাল কোটে যন্ত্র দিয়ে চাল কোটে।

 

পাশে বসে থাকা সুবোধ (৭৫) বলেন, জন্মের পর দেখেছি প্রতি বাড়িতে ঢেঁকি ছিল। আজকাল তো ঢেঁকি দেখাই যায় না। পোলাপানরাও এখন আর ঢেঁকি চিনেনা।কেউ এখন আর কষ্ট করতে চায় না।

 

বিশেষজ্ঞদের ধারণা, নতুন প্রজন্মের কাছে অপরিচিত একটি যন্ত্র হতে পারে এটি। প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়ে যাওয়া ঢেঁকির কদর নেই বললেই চলে। তবে ঢেঁকি ছাঁটা চাল মানবদেহের জন্য অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর। বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী ঢেঁকি ছাঁটা চাল।

 

আরও খবর

Sponsered content