সারাদেশ

নৌকায় ভোট দেওয়ায় বৃদ্ধা মাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিলেন ছেলে

নৌকায় ভোট দেওয়ায় বৃদ্ধা মাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিলেন ছেলে

রাজশাহীর বাঘায় নৌকায় ভোট দেওয়ায় বৃদ্ধা মা রুপজান বেওয়াকে (৯০) বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছেলে সাকেত আলীর বিরুদ্ধে। কোনো উপায় না পেয়ে বৃদ্ধা আশ্রয় নিয়েছেন পাশে তরফ আলীর বাড়িতে। এমন ঘটনা ঘটেছে উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের অমরপুর গ্রামে।

 

জানা যায়, ভোটার হওয়ার পর থেকে বৃদ্ধা রুপজান নৌকায় ভোট দিতেন। সেই মোতাবেক গত ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধন্দহ-অমরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে নৌকা মার্কায় ভোট দেন। নৌকায় বৃদ্ধা মায়ের ভোট দেওয়ার বিষয়টি ছেলে সাকেত ও জামাই আনোয়ার হোসেন খাঁ জানতে পেরে ভোটের দিন সন্ধ্যায় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে তাঁকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন। বৃদ্ধা কোনো উপায় না পেয়ে পাশের তরফ আলীর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।

 

আজ মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) বৃদ্ধা রুপজান বেওয়া বিষয়টি জানাতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা আলম হোসেনের কাছে যান। সেখানে তাঁর বাড়ির আঙিনায় বাঁশের তৈরি মাচায় বসে অভিযোগগুলো করেন। বৃদ্ধার কথা শুনে আলম বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমকে অবগত করেন। বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে বৃদ্ধার জন্য জমি দেখার নির্দেশ দিয়েছেন আলম হোসেন জানান।

 

এদিকে ছেলে সাকেত আলী বৃদ্ধা মাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেছেন, ‘মাকে নৌকায় ভোট দেওয়ার বিষয়ে কোনো কথা বলিনি। বৃদ্ধ হয়ে গেছে, আমার ওপর রাগ করে বাড়ি থেকে চলে গেছে। তবে দুই-একদিন পর রাগ কমে গেলে বাড়িতে চলে আসবে।

 

বৃদ্ধা রুপজান বেওয়া বলেন, ‘ছেলে নৌকায় ভোট দিতে নিষেধ করেছিল। ছেলে নিষেধ না শুনায় আমাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। আমি সারা জীবন নৌকায় ভোট দিয়ে এসেছি। নৌকা মার্কা দেখে ছেলের কথা রাখতে পারিনি। তবে যে কয়দিন বেঁচে আছি, ভোট আসলে নৌকা ছাড়া আর কাউকে ভোট দিতে পারবেন না বলে জানান।

 

তরফ আলী বলেন, ‘নৌকায় ভোট দেওয়ার কারণে তাঁর ছেলে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন বলে মাগরিব নামাজের পরে আমার বাড়িতে আসেন। তাকে রাতের খাবার খাইয়ে পাশের একটি ঘরে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। আমার বাড়িতে দুই দিন থেকে আছে।

 

কোথাও থাকার জায়গা না পেলে আমার এখানে থাকবে, খাবে এতে কোনো অসুবিধা হবে না। বৃদ্ধ হয়ে গেছে কত দিনই না বাঁচবে। যত দিন ইচ্ছা থাকবে কোনো সমস্যা নেই। রুপজানের স্বামী হয়রত আলী প্রায় ৩০ বছর আগে মারা গেছে। সেও নৌকার ভক্ত ছিল। নির্বাচন আসলে নৌকার মিছিলে আগে আগে থাকত।

 

আরও খবর

Sponsered content