সারাদেশ

‘আমি কি আওয়ামী লীগ করে কোনো দোষ করেছি’ বাস ভাঙচুরের মামলা খেয়ে বললেন ছাত্রলীগ কর্মী

‘আমি কি আওয়ামী লীগ করে কোনো দোষ করেছি’ বাস ভাঙচুরের মামলা খেয়ে বললেন ছাত্রলীগ কর্মী

গাজীপুরের শ্রীপুরে বাস ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় গতকাল সোমবার বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করেন তাকওয়া পরিবহনের মিনিবাসের মালিক স্বপন আহমদ। মামলার এজাহারে ২৭ জনের নাম উল্লেখ আছে। এর মধ্যে মামলার ১৩ নম্বর আসামির তালিকায় আছেন ছাত্রলীগের এক কর্মী। তার নাম আব্দুল্লাহ আল মামুন। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি।

 

‘আমি কি আওয়ামী লীগ করে কোনো দোষ করেছি’ বিস্ফোরক মামলা খেয়ে বললেন ছাত্রলীগ কর্মী। নোয়াখালীতে সড়ক দুর্ঘটনায় নারী নিহত। আব্দুল্লাহ আল মামুন বরমী ইউনিয়নের বরমী গ্রামের মোহাম্মদ মোস্তফা কামালের ছেলে।

 

ছাত্রলীগের কর্মী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, গত ৫ নভেম্বর সকালে সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট রহমত আলীর মেয়ে ও সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য রুমানা আলী টুসি আপার সমর্থনে বরমী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফ হায়দার মৃধার নেতৃত্বে শান্তি মিছিলে অংশ নিই। এরপর বিভিন্ন জায়গায় শান্তি সমাবেশে অংশ নিই।

 

ওই দিন মধ্যরাত পর্যন্ত যুবলীগ নেতা শরিফ হায়দার মৃধার সঙ্গে রাজপথে ছিলাম। অথচ সকাল সাড়ে ৬টার দিকে বেড়াইদেরচালা এলাকায় তাকওয়া পরিবহনের একটি বাস ভাঙচুরের মামলায় বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে আমাকেও আসামি করা হয়েছে।

 

যে মামলায় মোট আসামি ২৭ জন, সেখানে আমাকে ১৩ নম্বর আসামি করা হয়েছে। গতকাল সোমবার তাকওয়া পরিবহনের মিনিবাসের মালিক স্বপন আহমদ বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় বিস্ফোরক আইনে মামলাটি করেন। অথচ সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত প্রতিদিন আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে অংশ নিচ্ছি আমি।

 

মামলায় উল্লেখ করা তারিখ অনুযায়ী ছাত্রলীগের কর্মী আব্দুল্লাহ আল মামুন আওয়ামী লীগের শান্তি মিছিল-সমাবেশে ছিলেন বলে জানিয়েছেন ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতিসহ আওয়ামী-যুবলীগের অসংখ্য নেতাকর্মী। বিস্ফোরক মামলায় আসামি হওয়ার পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করে পোস্ট দেন মামুন।

 

তিনি ২০২২ সালে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দেওয়া একটি প্রত্যয়নপত্রের ছবি শেয়ার দিয়েছেন। সেখানে লেখা, তার বাবাসহ পরিবারের সবাই আওয়ামী লীগ সমর্থিত পরিবার।

 

ফেসবুক পোস্টে মামুন লেখেন, ‘আমি কেন মিথ্যা মামলা খাব? এটার কি কোনো বিচার হবে না? দেশে কি কোনো আইন নেই? আমরা কি সারা জীবন এভাবেই নির্যাতিত হব? আমি কি আওয়ামী লীগ করে কোনো দোষ করেছি? যদি দোষ না করে থাকি, তাহলে কেন আমাকে বারবার মিথ্যা মামলায় জড়াবে? এর পেছনে কার হাত? আমাদের আকুল আবেদন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে এটার সুষ্ঠু বিচার চাই।

 

বরমী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. মুরাদ হোসেন বলেন, ‘আমি দীর্ঘ সাত বছর ছাত্রলীগের ইউনিয়ন শাখার সভাপতি ছিলাম। আব্দুল্লাহ আল মামুন নিয়মিত ছাত্রলীগের সব আন্দোলন-প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতেন। তাকে যড়যন্ত্র করে এই মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।

 

বরমী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফ হায়দার মৃধা বলেন, ‘আব্দুল্লাহ আল মামুন ছাত্রলীগের একজন সক্রিয় কর্মী। পারিবারিক কারণে যড়যন্ত্র করে তাকে মামলার আসামি করা হয়েছে। মামলায় গাড়ি ভাঙচুরের যে সময় দেখানো হয়েছে, সে তখন আমার বাসায় ছিল। আমরা শান্তি সমাবেশে যোগদান করতে প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম।

 

এরপর আমার সঙ্গে থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য রুমানা আলী টুসি আপার সমর্থনে চারটি প্রোগ্রামে অংশ নিই। তারা মধ্যরাত পর্যন্ত আমার সঙ্গে নিয়মিত। তাহলে কী করে গাড়ি ভাঙচুর করল?

 

শরিফ হায়দার মৃধা দাবি করেন—দুই গ্রুপের রাজনৈতিক বিরোধের কারণে তাকে যড়যন্ত্র করে মামলার আসামি করা হয়েছে। মামলার বাদী স্বপন আহমদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে পরপর কয়েকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

 

বরমী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হারুনুর রশীদ খন্দকার বলেন, আব্দুল্লাহ আল মামুনের চাচা ছিলেন বরমী ইউনিয়নের একটি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি। তার চাকরির জন্য আমরা প্রত্যয়ন দিয়েছি। সেখানে সবই উল্লেখ রয়েছে। সে যুবলীগের শরিফ হায়দার মৃধার সঙ্গে অন্য একটি গ্রুপে রাজনীতি করে। এর বেশি কিছু আমি বলতে পারব না।

 

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম নাসিম বলেন, ‘মামলায় বাদী এজাহারে যাদের নাম উল্লেখ করেছেন, সেটি মামলা হিসেবে রুজু হয়েছে। তদন্তের পর জড়িত থাকার প্রমাণ না পেলে চার্জশিট থেকে তার নাম বাদ দেওয়া হবে।

 

আরও খবর

Sponsered content