সারাদেশ

বাজারের অর্ধেক ইলিশই ডিমওয়ালা, দামও হাতের নাগালে

বাজারের অর্ধেক ইলিশই ডিমওয়ালা, দামও হাতের নাগালে

মা ইলিশ রক্ষায় টানা ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার মাছবাজারগুলোয় গত দুই দিন ধরে যেসব ইলিশ আসছে, সেগুলোর অর্ধেকই ডিমওয়ালা। স্বাদ কম হওয়ায় এসব ডিমওয়ালা ইলিশ তুলনামূলক কম দামে বিক্রি হচ্ছে।

 

জেলেদের জালে ভরপুর ডিমওয়ালা মা-ইলিশ আসাতে নিষেধাজ্ঞার সফলতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তবে বাজারে ডিমওয়ালা ইলিশ এলেও, ভবিষ্যতে ইলিশের উৎপাদনে প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন মৎস্য কর্মকর্তারা।

 

জানা যায়, ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে গত বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর থেকে মেঘনা নদীতে মাছ ধরা শুরু করে রায়পুরের ৮ হাজার জেলে। শনিবার (৪ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টার পর্যন্ত উপজেলার আলতাফ মাস্টার ঘাট, সাজু মোল্লা ঘাট, হাজীমারা বাজার, নতুন বাজার ও পুরান বেড়ির মাছবাজার ঘুরে দেখা যায়, ছোট, মাঝারি ও বড় আকারের ইলিশের পসরা সাজিয়ে বসে আছেন বিক্রেতারা। সেগুলোর একটা বড় অংশ ডিমওয়ালা। ডিমওয়ালা মাছের দাম তুলনামূলক কম। তবে অধিকাংশ ক্রেতা ডিম ছাড়া ইলিশ খুঁজছেন। সেগুলো দ্রুত শেষও হয়ে যাচ্ছে।

 

নতুন বাজারের মাছবিক্রেতা জয়নাল বলেন, এক কেজি ওজনের ডিমওয়ালা ইলিশ ৭৫০-৮০০ টাকায়, ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের প্রতি কেজি ৪০০-৪৫০ টাকায় ও ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের প্রতি কেজি ডিমওয়ালা ইলিশ ৬৫০-৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডিম ছাড়া ইলিশের দাম ওজনভেদে ১০০-১৫০ টাকা বেশি।

 

চরবংশী ইউনিয়নের মাস্টার ঘাটের ব্যবসায়ী হোসেন বলেন, বাজারে প্রচুর ইলিশ উঠেছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় বেশির ভাগ ইলিশের পেটভর্তি ডিম। ৫০০ গ্রাম থেকে এক কেজি বা তার ওপরের ইলিশের পেটভর্তি ডিম। সরকারের এই নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা আরও ১০ থেকে ১৫ দিন বাড়ানো উচিত। তাহলে এসব ইলিশ ডিম ছেড়ে দিত বা এত ডিমওয়ালা ইলিশ ধরা পড়তো না।

 

রায়পুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এমদাদুল হক বলেন, এবার নদীপারের সিংহভাগ জেলে সরকারের নিষেধাজ্ঞা মেনে চলায় ইলিশের ডিম ছাড়ার লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। তিনি জানান, এমনিতে সারাবছর ইলিশ কমবেশি ডিম ছাড়ে। বেশি ডিম ছাড়ে প্রজনন সময়ে। অর্থাৎ অক্টোবর মাসের অমাবস্যা ও পূর্ণিমাতে।

 

এই বছর ঐ সময়টা ছিল বেশি পরিমাণে ডিম ছাড়ার সময়। তাই এখন বাজারে ডিমওয়ালা ইলিশ আসায় উদ্বেগের কিছু নেই। আমরা যা আশা করেছি, এবার তার চাইতে বেশি ডিম ছেড়েছে ইলিশ। এ বছর কোস্টগার্ড না থাকার পরও মা-ইলিশের অভিযান শতভাগ সফল হয়েছে দাবি করে এ কর্মকর্তা।