24 October 2023 , 8:05:18 প্রিন্ট সংস্করণ
কুষ্টিয়ায় পদ্মা নদীতে সংবাদ সংগ্রহকালে সাংবাদিকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা করে ডুবিয়ে হত্যাচেষ্টা মামলায় জড়িত সন্দেহে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে নৌ-পুলিশ। সোমবার বিকেলে কুমারখালী উপজেলার বানিয়াপাড়া গ্রাম থেকে রুহুল আমিন (৩৮) নামে ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ওই গ্রামের সিরাজ উদ্দিন ওরফে সিরাজ বাঘার ছেলে।
রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রক্ষা ও নদীর গতিপ্রকৃতি সুরক্ষার উদ্দেশ্যে নির্ধারিত মৌজাভুক্ত এলাকায় উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও পদ্মা নদী থেকে বে-আইনি ও অবৈধ পন্থায় বালু উত্তোলন আজও বন্ধ করতে পারেনি কুষ্টিয়ার প্রশাসন। প্রকাশ্যে দিন-রাতভর তোলা হচ্ছে বালু। প্রতিদিন প্রায় শত শত ট্রলার ভর্তি করে বালু তুলছে বালুখেকো চক্র।
এভাবে অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলায় নদী হারাচ্ছে স্বাভাবিক প্রকৃতি-গতিপথ। এতে তীব্র ভাঙনে বিলীন হচ্ছে নদীপাড়ের সমতলভূমি কৃষিজমি নানা স্থাপনাসহ বাড়িঘর ও জনপদ। এবিষয়ে সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে বালুখেকো চক্রের সন্ত্রাসী বাহিনীর হামলার শিকার হন সাংবাদিকগণ।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার দুপুরে কুষ্টিয়ার পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তোলার দৃশ্য ধারণ করতে গেলে ছয়জন টেলিভিশন সাংবাদিকের ওপর হামলা করে সন্ত্রাসীরা। এসময় সাংবাদিকদের নৌকায় ছিলেন নিউজ টোয়েন্টিফোর টিভির জাহিদুজ্জামান, চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের শরীফ বিশ্বাস, বাংলাভিশনের হাসান আলী, এনটিভির সাবিনা ইয়াসমিন শ্যামলী ও ক্যামেরাপারসন আসিফুজ্জামান সারফু ও এসআই সুমন। হামলাকারীরা সাংবাদিকদের নৌকাকে স্পিডবোট দিয়ে ধাক্কা মেরে ডুবিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে।
সে সময় তারা সাংবাদিকদের অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। ছিনিয়ে নেয় ভিডিও ধারণ করা একটি ক্যামেরা এবং মোবাইল ফোন। এ ঘটনায় চারজনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন নিউজ টোয়েন্টিফোর টিভির সাংবাদিক জাহিদুজ্জামান।
ঘটনার পরদিন শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় কুষ্টিয়ার ৫ রাস্তার মোড় মুজিব চত্বরে কুষ্টিয়া টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজনে মানববন্ধন থেকে সাংবাদিকরা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের আল্টিমেটাম দেন। এরই মধ্যে জড়িত সন্দেহে এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নৌ-পুলিশের এসআই জামাল বলেন, যে স্পিডবোটে করে সাংবাদিকদের বোটে হামলা হয়েছিল সেই বোটের পেছন দিকে ক্যাপ পরিহিত ছিলেন রুহুল আমিন। মামলায় উল্লেখ না থাকলেও তদন্তের মাধ্যমে তার নাম জানতে পারে পুলিশ।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃত রুহুলকে কুষ্টিয়া সদর আমলি আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। একই সাথে এ মামলার এজাহারনামীয় অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশি অভিযান চলছে বলেও জানান তিনি।