সারাদেশ

পঞ্চগড়ে মানববন্ধন উইঘুর মুসলিমদের ওপর নির্যাতন বন্ধের দাবীতে

পঞ্চগড়ে মানববন্ধন উইঘুর মুসলিমদের ওপর নির্যাতন বন্ধের দাবীতে

চীনের জিনজিয়াং প্রদেশের উইঘুর মুসলিমদের হত্যা ও অমানবিক নির্যাতন বন্ধ করে কারাবন্দী লক্ষ লক্ষ মুসলিমের মুক্তির দাবিতে পঞ্চগড়ে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ১ অক্টোবর রবিবার এম আর সরকারি কলেজ রোডে পঞ্চগড় সচেতন নাগরিক সমাজ নামে একটি সামাজিক সংগঠন এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।

 

মানববন্ধনে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, সামাজিক সাংস্কৃতিক বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মী ও সচেতন নাগরিক সমাজ উপস্থিত ছিলেন। বেলা ১১টায় পঞ্চগড়বাসী এক প্রতিবাদ মিছিল বের করে। পরে তা পঞ্চগড়ের এম আর কলেজ সড়কে শিল্পকলা একাডেমীর সামনে এসে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় পরিণত হয়।

 

পঞ্চগড়ের তরুণ প্রজন্ম ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এই মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ১৯৩০ সাল থেকে ৯৩ বছর ধরে উইঘুর মুসলিমদেরকে জাতিগত বিনাশ করার লক্ষ্যে রাষ্ট্রীয় বাহিনী নির্যাতন করে আসছে।

 

বর্তমানে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নামে কারাগার তৈরি করে প্রায় পনের লক্ষ উইঘুর মুসলিমকে আটক করে রাখা হয়েছে। বক্তারা এই নির্যাতন বন্ধ করে কারাবন্দী উইঘুর মুসলিমদের মুক্তির দাবি জানান। এছাড়া উইঘুরদের ওপর অত্যাচার বন্ধ করে স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার পথ তৈরি করে দিতে দেশটির সরকারের প্রতি আহবান জানান।

 

প্রেসক্লাবের সভাপতি ও পঞ্চগড় সচেতন নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে গণসংহতি আন্দোলনের পঞ্চগড় জেলা শাখার আহ্বায়ক সাজেদুর রহমান সাজু, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক আজহারুল ইসলাম জুয়েল, সাংবাদিক ও পরিবেশ কর্মী সরকার হায়দার, সাবেক ছাত্র নেতা বাবুল হোসেন, গ্রামবাংলা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান পরিবেশ কর্মী সাইফুল ইসলাম শান্তি, সাংবাদিক নেতা মোশারফ হোসেন, সাবেক ছাত্র নেতা বাবুল হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

 

সচেতন নাগরিকের আহবায়ক সাজ্জাদুর রহমান বলেন, গত ৭ বছর ধরে কারিগরি শিক্ষা দেওয়ার নামে উইঘুর পুরুষদের পরিবার থেকে আলাদা করে জেলে বন্দি করে অত্যাচার চালানো হচ্ছে। এদের মধ্যে অনেকে জেলখানায় মৃত্যুবরণ করেছেন। অবিলম্বে তাদের মুক্তি দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার সুযোগ করে দিন।

 

সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক আজহারুল ইসলাম জুয়েল বলেন, ২০০৯ সালে চীন দেশের জিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর মুসলিম হত্যাযজ্ঞ চালায় রাষ্ট্রীয় বাহিনী। সেই থেকে আজও সেখানে মুসলিম হত্যা নির্যাতন লেগেই আছে। ২০১৬ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত দফায় দফায় গণহত্যা চালানো হয়।

 

পরিবেশকর্মী সরকার হায়দার বলেন, উইঘুর মুসলমান সন্তানদের তাদের অভিভাবকদের কাছ থেকে কৌশলে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হচ্ছে। গর্ভপাত না ঘটালে উইঘুর ও অন্যান্য সংখ্যালঘু নারীদের বন্দীশিবিরে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

 

যেসব নারীর সন্তান সংখ্যা দুইয়ের বেশি তাদের জরায়ুতে জোর করে জন্মনিয়ন্ত্রণ ডিভাইস প্রতিস্থাপনের আইনি বৈধতা দেওয়া হয়েছে। অনেকের অপারেশনের মাধ্যমে স্থায়ীভাবে বন্ধ্যা করা হচ্ছে। এছাড়া যেসব নারীর সন্তান সংখ্যা দুইয়ের বেশি তাদের বড় অংকের জরিমানা করা হচ্ছে। তিনি উইঘর নারীদের প্রতি যৌন নির্যাতন বন্ধের আহ্বান জানান।

আরও খবর

Sponsered content