স্বাস্থ্য

শিশুর জ্বরজনিত খিঁচুনি হলে কী করবেন

শিশুর জ্বরজনিত খিঁচুনি হলে কী করবেন

শিশুরা প্রায়ই জ্বরে আক্রান্ত হয়। কোনো কোনো শিশুর ক্ষেত্রে শরীরের তাপমাত্রা বাড়লে খিঁচুনি হতে পারে, যা সাধারণত জ্বরজনিত খিঁচুনি বা ফেব্রাইল কনভালশন নামে পরিচিত। কাদের হয়? – সাধারণত তিন মাস থেকে ছয় বছর বয়সী শিশুদের জ্বরের প্রথম দিন এই খিঁচুনি হতে পারে। – টিকা দেওয়ার পর জ্বর এলে খিঁচুনির আশঙ্কা বেড়ে যায়। – পরিবারের মা-বাবা, ভাইবোন অথবা নিকটাত্মীয় কারও জ্বরজনিত খিঁচুনির ইতিহাস থাকলে এ ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। – শিশুর প্রথমবার জ্বরের সঙ্গে খিঁচুনি হলে পরবর্তী সময়ে প্রতিবার জ্বর হলে খিঁচুনি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। লক্ষণ কী? -হঠাৎ করে শিশুর হাত-পা বাঁকা হয়ে যাওয়া, চোখ উল্টে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা, দাঁতে দাঁত লেগে যাওয়া এবং মুখ থেকে ফেনা আসতে পারে। -সাধারণত একবারই খিঁচুনি হয় এবং কয়েক মিনিট স্থায়ী হতে পারে। -খিঁচুনির পর শিশু আবার স্বাভাবিক হয়ে যায় অথবা ঘুমিয়ে যেতে পারে। -খিঁচুনির পর শরীরের কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অবশ বা শিশুর স্বাভাবিক বিকাশ ব্যাহত হয় না।

 

খিঁচুনি হলে করণীয় কী?

-সবচেয়ে জরুরি বিষয়, আতঙ্কিত হওয়া যাবে না।

-শিশুকে দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আঁটসাঁট পোশাক থাকলে খুলে দিতে হবে।

-একপাশে কাত করে শুইয়ে দিতে হবে। দাঁতের ফাঁকে চামচ অথবা অন্য কোনো কিছু দেওয়া যাবে না।

– শিশুর মুখে কোনো খাবার বা ওষুধ দেওয়া যাবে না।

-দ্রুত জ্বর কমানোর ব্যবস্থা করতে হবে। প্যারাসিটামল-সাপোজিটরি বয়স ও ওজন অনুযায়ী দেওয়া যেতে পারে।

-কুসুম গরম পানি দিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে। বেশি জ্বর হলে মাথায় পানি দিতে হবে। কখন হাসপাতালে নেবেন?

-খিঁচুনি অনেকক্ষণ স্থায়ী হলে অথবা একই দিনে বারবার হলে কিংবা এটা যদি শিশুর প্রথম জ্বরজনিত খিঁচুনি হয়, তবে অতিদ্রুত নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

– শিশু যদি অজ্ঞান হয়ে যায়। -খিঁচুনির পর যদি শিশুর স্বাভাবিক বিকাশ বাধগ্রস্ত হয়।

মনে রাখবেন, সাধারণ জ্বরজনিত খিঁচুনি শরীরের তাপমাত্রা কমলে এমনিতেই বন্ধ হয়ে যায় এবং এ ক্ষেত্রে শিশুর কোনো স্বাস্থ্য সমস্যাও হয় না। অতএব, আতঙ্কিত না হয়ে একটু সচেতন হলেই খিঁচুনি প্রতিকার করা সম্ভব। লেখক: নবজাতক, শিশু ও কিশোর রোগ বিশেষজ্ঞ এবং সহযোগী অধ্যাপক, বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল অ্যান্ড ইনস্টিটিউট, ঢাকা; কনসালট্যান্ট, আলোক হেলথকেয়ার লিমিটেড, পল্লবী, মিরপুর, ঢাকা।