সারাদেশ

চাঁদাবাজি করতে গিয়ে সাবেক বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতাকে বেধড়ক পিটুনি

চাঁদাবাজি করতে গিয়ে ব্যবসায়ীদের হাতে গণপিটুনির শিকার হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের বহিষ্কৃত সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি মেহেদী হাসান ও তার সহযোগী শহিদুল ইসলাম। পরে তাদেরকে পুলিশে সোপর্দ করে বলে জানা গেছে। মেহেদী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ছিলেন তিনি।

 

রোববার (৩ জুন) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল সংলগ্ন পলাশী বাজারে এ ঘটনা ঘটে। রাত ১টা পর্যন্ত ব্যবসায়ীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মেহেদী এবং শহিদুল পলাশী বাজারে চাঁদাবাজি করতে এসে। চাঁদাবাজির এক পর্যায়ে বাঁধা দেওয়ায় চাপাতি দিয়ে নজরুল এবং মাহবুব নামের দুই ব্যবসায়ীকে মারতে গেলে দোকানিরা ক্ষিপ্ত হয়ে মেহেদী ও তার সহযোগীকে ধরে ফেলে এবং গণপিটুনি দেয়। পরে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পরে তাদেরকে রাত ১২ টার দিকে চকবাজার থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

এর আগে পলাশী বাজারের কলা বিক্রেতা দেলোয়ার থেকে এক হাজার টাকা এবং কনফেকশনারি দোকানের মালিক সানাউল্লাহ থেকে চাঁদা নেন তারা। অভিযোগ রয়েছে, প্রায় প্রতিদিন চাঁদাবাজি করতে পলাশীর ওই বাজারে যান সলিমুল্লাহ হল ছাত্রলীগের সাবেক এই নেতা ও তার সহযোগী শহিদুল।

নজরুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, চাঁদা চাইতে আসলে আমরা তাকে বাঁধা দিই। তাতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রথম আমাকে ঘুসি মারে এবং পরবর্তীতে চাপাতি নিয়ে আসে। তাঁদের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ। নিয়মিত অত্যাচার এবং চাঁদাবাজি করে তারা।

পলাশী দোকান মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল হক বলেন, রাত ১১টার দিকে এসে এই ছাত্রলীগ নেতা আমাদের দোকানীদের থেকে চাঁদা দাবি করে। তাকে বাঁধা দিলে সে নজরুল নামে এক ব্যবসায়ীকে মারধর করে এবং চাপাতি দিয়ে কোপাতে যায়।

পরে সে পালিয়ে গেলে আমাকে চাপাতি দিয়ে মারতে আসে। আশেপাশে থাকা দোকানিরা আমাকে উদ্ধার করে এবং তাদের ধরে ফেলে। তারপর সবাই মিলে গণ পিটুনি দেয়। পরে আমরা পুলিশকে খবর দিলে তারা এসে নিয়ে যায়।

সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ইকবাল মামুন বলেন, এটা প্রক্টোরিয়াল টিম দেখবে। সে এখন আমাদের ছাত্র নয়। কারণ তার ছাত্রত্ব নেই। সে যে অবৈধভাবে হলে থাকে সেটি আমরা তাকে আগে চিহ্নিত করতে পারলে আগেই হল থেকে বের করে দিতাম।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাকসুদুর রহমান বলেন, চাঁদাবাজির অভিযোগে সাবেক এক শিক্ষার্থীলে পুলিশে দিয়েছে সেটা মাত্র শুনেছি। যেহেতু সে হলে থাকে তাহলে সেটা হল প্রশাসন দেখবে।

বর্তমানে সে যেহেতু আমাদের শিক্ষার্থী না, তাই আমাদের এখানে কোনো দায় নেই। ফলে বিধি অনুযায়ী তাকে কোনো শাস্তি বিশ্ববিদ্যালয় দিতে পারবে না। সরকারের প্রচলিত আইন অনুযায়ী তার শাস্তি হবে।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে সংগঠনের শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতিকে পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়ে ছাত্রলীগ। ২০১৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কর্মরত এক সাংবাদিককে হেনস্তার সঙ্গে জড়িত থাকায় তাকে হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

আরও খবর

Sponsered content