বাংলাদেশ

ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতের সবচেয়ে বেশি ঝূঁকিতে যেসব জেলা

বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করা ঘূর্ণিঝড় ‘রেমালের’ ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। রোববার (২৬ মে) উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে একই এলাকায় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে।

 

সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪০০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৬০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৩৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে আজ সন্ধ্যা বা মধ্যরাতের দিকে মোংলার কাছ দিয়ে সাগর আইল্যান্ড (পশ্চিমবঙ্গ) – খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

 

ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ এর প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি শুরু হয়েছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটার এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

 

এ অবস্থায় পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ১০ (দশ) নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

 

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক আজিজুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাবে আজ বিকাল তিনটা থেকে চৌদ্দটি জেলায় ভারী বৃষ্টিপাত সহ দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাবে।

 

এটি যতই উপকূলের দিকে আসবে ততই দমকা হাওয়া ও বৃষ্টিপাত ক্রমান্বয়ে বেড়ে যাবে। ঘূর্ণিঝড়টি সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত নাগাদ সময়ে মোংলার কাছ দিয়ে পটুয়াখালীর খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

 

কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে নয় নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এর বাইরে ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর ও তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ নয় নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

 

আবহাওয়া অফিসের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

 

এছাড়া প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুদ্ধ রয়েছে। প্রবল ঘূর্নঝড়ের অগ্রবতী অংশের প্রভাবে দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলাগুলোতে ৮-১০ ফুট জলোচ্ছাসে প্লাবিত হতে পারে। ঝড়ের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধ্বসও হতে পারে।

 

আবহাওয়া অফিসের বলছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সমুদ্র খুবই উত্তাল রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং অদূরবর্তীদ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে তিন থেকে পাঁচ ফুটের বেশি জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

 

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা বরিশাল, চট্টগ্রামে দমকা ও ঝড়ো হাওয়াসহ ভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে।

 

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয় বলেছে আবহাওয়া অফিস।

 

আরও খবর

Sponsered content