সারাদেশ

যে শিশুর কান্নায় কেঁদেছে দেশ

ময়মনসিংহের ভালুকায় স্কয়ার মাস্টার বাড়ি এলাকায় শিশু সন্তান ও তার মা সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন। গত বৃহস্পতিবার (৯ মে) রাত আনুমানিক ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে-৯৯৯ কল পেয়ে পুলিশ ওই শিশু ও তার মাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ভালুকা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

 

সেখান শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মা মারা গেলেও আহত শিশু ছেলেটি বেঁচে যায়। তার ‘মা মা’ চিৎকারে ভারি হয়ে ওঠে হাসপাতালের শিশু বিভাগ। তার কান্নার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে; যা দেখে সারাদেশের মানুষ কেঁদেছেন।

 

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে আহত শিশুটি এবং নিহত মায়ের মরদেহ শনিবার (১১ মে) পর্যন্ত মর্গে পড়ে থাকার পর তাদের পরিচয় মেলে। এদিন রাতে শিশুটির মামা মো. রবিন মিয়া ফেসবুকে তাদের ভিডিও দেখে রোববার সকালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসে তাদের পরিচয় নিশ্চিত করেন।

 

জানা গেছে, নিহত ওই মায়ের নাম জায়েদা (৩২)। তিনি সিলেট সুনামগঞ্জ জেলার দুয়ারা উপজেলার খুশিউড়া গ্রামের বাসিন্দা মো. রমিজ উদ্দিনের মেয়ে। বেঁচে যাওয়া দেড় বছর বয়সী শিশুটির নাম জাহিদ হোসেন।

 

নিহত জায়েদার বড় ভাই মো. রবিন মিয়া বলেন, ফেসবুকের মাধ্যমে জায়েদার মৃত্যুর খবর পাই আমরা। ভালুকার স্কয়ার মাস্টারবাড়ি এলাকায় শিশু জাহিদকে নিয়ে বসবাস করতেন জায়েদা।

 

পারিবারিক বিরোধের কারণে স্বামী ছাড়াই বাচ্চাকে নিয়ে বসবাস করতেন তিনি। আমার বোনের কপালে এমন দুর্ভোগ লেখা ছিল যার কষ্ট তার ছোট্ট শিশুকেও বইতে হচ্ছে।

 

ভালুকা হাইওয়ে থানা পুলিশের কর্মকর্তা মো. বাবুল হোসেন জানান, কাপাসিয়া উপজেলার বাসিন্দা মো. ফারুক মিয়ার সঙ্গে নিহত জায়েদার দ্বিতীয় বিয়ে হয়। ফারুক স্থানীয় বাসিন্দা কফিল উদ্দিনের ছেলে। ফরুকের ঘরে প্রথম স্ত্রীসহ তিনটি সন্তান রয়েছে।

 

যে কারণে জায়েদার বিয়ে মেনে নেয়নি ফরুকের পরিবার। ফলে জায়েদার সঙ্গে তার স্বামীর যোগাযোগ না থাকায় স্কয়ার মাস্টারবাড়ি এলাকায় শিশু জাহিদকে নিয়ে বসবাস করতেন। ধারণা করা হচ্ছে, ঘটনার দিন রাতে তিনি রাস্তা পারাপার হতে গিয়ে এ দুর্ঘটনার শিকার হন।

 

তিনি জানান, জায়েদার মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে তার ভাইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে, শিশু জায়েদকে এখনো হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তার মাথায় আঘাত পাওয়ার কারণে তার চিকিৎসায় বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

 

আরও খবর

Sponsered content