সারাদেশ

আশুলিয়ায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যা: গ্রেপ্তার স্বামী

আশুলিয়ায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যা: গ্রেপ্তার স্বামী

সাভারের আশুলিয়ায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে রড দিয়ে পিটিয়ে বেধরক নির্যাতনের একপর্যায়ে স্ত্রী শিমা আক্তার মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লে অ্যাম্বুলেন্স করে হাসপাতালে নেবার পথিমধ্যে মৃত্যু। এসময় অ্যাম্বুলেন্সের ভিতরে থাকা পাষণ্ড স্বামীকে অ্যাম্বুলেন্স চালকের দুঃসাহসিকতা ও বুদ্ধিমত্তায় হত্যাকারী স্বামী শহিদুল ইসলামকে আটকে রেখে ৯৯৯ এ কল দিয়ে র‍‍্যাব-৪ ও পুলিশের হাতে সোপর্দ করে গ্রেপ্তার করা হয়।

 

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) রাত ১০ টার দিকে আশুলিয়ার জামগড়ার দরগারপার এলাকায় নিজ বাসায় এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। গ্রেপ্তারকৃত আসামি শহিদুল ইসলাম তিনি পেশায় একজন ড্রাইভার। নিহত ফারজানা শিমা তাদের একটি মেয়েকে নিয়ে বসবাস করতেন।

জানা যায়, প্রায় ১২ বছর আগে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন শহিদুল ইসলাম ও শিমা আক্তারের। বিয়ের শুরু থেকেই থেকেই বিভিন্ন ভাবে যৌতুকের চাপ দিলে মাঝখানে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। বিচ্ছেদের প্রায় ৩ বছর পর তারা আবার একত্র সংসার শুরু করেন। সংসার চলাকালীন অবস্থায় শহিদুল ইসলাম মাদকাসক্ত ও নেশায় জড়িয়ে পড়ায় প্রতিনিয়ত যৌতুকের টাকার দাবি করে বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন করতো তার স্ত্রী শিমাকে।

এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় স্ত্রী শিমাকে রড দিয়ে বেধড়ক মারধরের কারণে শিমা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লে হত্যাকারী স্বামী নিজেই স্ত্রী শিমাকে আশুলিয়ার ইউনিক এলাকার একটি ক্লিনিকে ভর্তি করেন। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য ছাড়পত্র দিলে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নেবার পথিমধ্যে স্ত্রী শিমা আকতারের মৃত্যু হয়।

শিমা আক্তারের মরদেহ ফেলে স্বামী শহিদুল ইসলাম পালাবার চেষ্টা করলে অ্যাম্বুলেন্স চালক নিজেই বুদ্ধিমত্তা খাটিয়ে জনগণকে সাথে নিয়ে এম্বুলেন্সে আটকে রেখে র‍‍্যাব-৪ এবং ৯৯৯ এ খবর দেয়। পরে র‍‍্যাব ও পুলিশের যৌথ অভিযানে ঘটনাস্থল থেকে স্বামী শহিদুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়।

এদিকে নিহতের পরিবারের দাবি বিয়ের শুরু থেকেই স্বামী শহিদুল ইসলাম যৌতুকের কারণেই স্ত্রী শিমাকে নির্যাতন করতো। রড দিয়ে বেধড়ক মারধর ও নির্যাতনে শিমা আক্তারের মৃত্যু হয়। আমরা এই হত্যাকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানাই।

র‍্যাব-৪ কোম্পানি কমান্ডার সিপিসি-২ লেফটেন্যান্ট রাকিব মাহমুদ খান বলেন, দুঃসাহসিক এই অ্যাম্বুলেন্স চালকের মাধ্যমে ৯৯৯ এ খবরে ঘটনাস্থলে এসে হত্যাকারী শহিদুল ইসলামকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। যৌতুকের দাবিতেই স্বামী স্ত্রীর মাঝে পারিবারিকভাবেই দণ্ড কলরহ চলে আসছিল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি স্বীকার করেন যৌতুকের দাবিতে বেধড়ক মারধরের কারণেই স্ত্রীর মৃত্যু হয়।

এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক(এসআই) নূর মোহাম্মদ বলেন, নিহতের রুম থেকে হত্যায় ব্যবহৃত একটি রড উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলে মর্গে পাঠানো হয়। গ্রেপ্তারকৃত আসামির বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন।

আরও খবর

Sponsered content