সারাদেশ

বিসিএস ক্যাডার হওয়ার আগে ‘বাসের সুপারভাইজার’ ছিলেন জবি শিক্ষার্থী

বিসিএস ক্যাডার হওয়ার আগে ‘বাসের সুপারভাইজার’ ছিলেন জবি শিক্ষার্থী

সম্প্রতি ৪৩তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল আউয়াল। নিজের বিসিএস পরীক্ষার অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করে ফেসবুকে এক স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি। যা মুহূর্তের মধ্যেই ভাইরাল হয়েছে। বিসিএস ভাইবার আগে বাসের সুপারভাইজারও ছিলেন এই যুবক। বিসিএস ক্যাডার হওয়ার পর তিনি নিজেই ফেসবুকে সেই অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। যা ফেসবুকে চাকরি প্রস্তুতির সকল গ্রুপ ও পেজে ছড়িয়ে পড়েছে।

 

শুভ জানান, ২০২২ সালের অক্টোবরে বাসের সুপারভাইজার শখ পূরণের জন্য দেশ ট্রাভেলসে গাইড (সুপারভাইজার) পদে সাক্ষাৎকার দেই। সুযোগও পেয়ে যাই। কিন্তু জামানতের ২০ হাজার টাকা জোগাড় করতে না পেরে সেবার আর যোগ দেয়া হয়নি। তিনি বলেন, আবার সামনে লিখিত পরীক্ষাও ছিল। তাই আফসোস না রেখে আবারও পড়াশোনা শুরু করি। আর দেশ ট্রাভেলসের ম্যানেজার (ঢাকা) আমজাদ খানের সঙ্গে যোগাযোগ রাখি, যাতে পরে সুযোগ দেয়া হয়।

 

এরপর লিখিত পরীক্ষা শেষে ২০২৩ সালের জুনে আবারও দেশ ট্রাভেলসে যাই। আমি তখন ভাবলাম বিসিএস ক্যাডার হয়ে গেলে আর কোনোদিনও আমার এই শখ পূরণ হবে না। সারা জীবনই এটা নিয়ে আফসোস করতে হবে। আবার ৪৪তম বিসিএসের রিটেনও শেষ।

 

তাই ২০ হাজার টাকা ১০ জনের কাছ থেকে ধার নিয়ে জমা দিয়ে দেশ ট্রাভেলসের এসি (হুন্দাই) গাইড (সুপারভাইজার) হওয়ার সুযোগ পেলাম। আমার ছোটবেলার শখ পূরণ হলো। বিসিএস ক্যাডার হওয়ার পর তিনি দেশ ট্রাভেলস কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

 

আব্দুল আউয়াল শুভর বাড়ি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায়। ছোটবেলা কেটেছে সৈকত শহর কক্সবাজারে। সেখান থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পাসের পর চলে আসেন উল্লাপাড়ায়। সেখান থেকে জিপিএ-৫ নিয়ে এইচএসসির পর ভর্তি হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগে।

 

শুভ আরও বলেন, ‘আমি স্কুলে এভারেজ স্টুডেন্ট ছিলাম। এসএসসি পাসের পর আমার কক্সবাজার পলিটেকনিকে সিভিলে চান্স হয়। কিন্তু আমার মনে হলো জীবনে বড় কিছু হতে হবে। তাই বাসার বাইরে যেতে হবে। সেই সময়ের পর থেকে আজ পর্যন্ত আমার পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘ সময় কাটানোর সৌভাগ্য হয়নি।

 

সুপারভাইজারের অভিজ্ঞতা কীভাবে বিসিএসের ভাইবায় কাজে দিয়ে এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রথমে দুই মাস প্রশিক্ষণ নিতে হয়েছে। কীভাবে মানুষের সঙ্গে কথা বলতে হয়, যাত্রীদের সেবা দিতে হয়—সবকিছুই শিখেছেন তিনি। কথা বলার প্রশিক্ষণটাই মূলত আমার বিসিএস ভাইভাতে খুব কাজে এসেছে।

 

যেহেতু অত্যাধুনিক বাসগুলোয় ডিউটি করতাম, যাত্রীদের বেশির ভাগই ছিলেন উচ্চবিত্ত। উচ্চ পদমর্যাদার মানুষের মনোভাব সম্পর্কে আমার একটা ধারণা হয়েছিল। এই চাকরির সুবাদে দেশের নানা প্রান্তে ঘোরা হয়েছে। এ অভিজ্ঞতাও কাজে এসেছে।

 

আরও খবর

Sponsered content