সারাদেশ

দুই ঘণ্টার বাজারে ২৫ মণ দুধ বিক্রি

দুই ঘণ্টার বাজারে ২৫ মণ দুধ বিক্রি

ঘড়ির কাঁটায় ঠিক সকাল সাড়ে ৬টা। কুয়াশা ভেদ করে সূর্যের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে বালতি, কলস বা ছোট ড্রামে করে দুধ নিয়ে বাজারে আসছেন বিক্রেতারা। অল্প সময়ের মধ্যেই দুই লাইন ধরে দুধ বিক্রির জন্য প্রস্তুত প্রায় ৫০-৬০ জন বিক্রেতা। ৭টা বাজতেই ক্রেতা-বিক্রেতায় মুখর অস্থায়ী এই দুধের বাজারটি। সকাল ৯টা পর্যন্ত চলে দুধ বেচাকেনা। এর মধ্যেই শেষ হয় অধিকাংশ বিক্রেতার দুধ।

 

মঙ্গলবার সকালে সরেজমিন ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে মানিকগঞ্জ পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের হিজুলি কাঁচা বাজারে। এ বাজারে শুধু দুধ নয় টাটকা শাক-সবজি, দেশীয় ফলমূলের জন্য বেশ পরিচিত মানিকগঞ্জ শহরের মানুষের কাছে।স্থানীয় ও বিক্রেতারা জানান, প্রায় দুই যুগ ধরে এই বাজারে দুধ বিক্রি করে আসছেন স্থানীয় কৃষকরা। প্রতিদিন ভোরে গরু থেকে দুধ সংগ্রহ করেই বিক্রির জন্য চলে আসেন তারা।

 

আশপাশের বেশ কয়েকটা ইউনিয়নের কৃষকরা তাদের দুধ বিক্রির জন্য এখানে আসেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বর্তমানে এই বাজারে বিক্রি হয় ২০-২৫ মণ দুধ। দুধের মান ভালো হওয়ায় দাম নিয়ে ক্রেতার সঙ্গে নেই কোনো বাতচিৎ। প্রতিকেজি দুধ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়। খুচরা ক্রেতাদের পাশাপাশি দেখা গেছে পাইকারদের। তারা বড় বড় ড্রামে করে প্রতিদিন এখান থেকে দুধ কিনে নিয়ে যান।

 

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার দক্ষিণ কৃষ্ণপুর গ্রামের যুবক হাফিজুর ইসলাম বলেন, ‘আমি কলেজে পড়াশোনা করি। বাড়িতে দুইটা গরু আছে। প্রতিদিন ৮-৯ লিটার দুধ দেয়। আমি সাইকেল নিয়ে প্রতিদিন সকালে এই বাজারে আসি। আজ ৬৫ টাকা কেজিতে দুধ বিক্রি করেছি। বাজারে আসার ৪০ মিনিটের মাথায় আমার সব দুধ বিক্রি শেষ।

 

কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের মকিমপুর গ্রামের বিজয় হোসেন বলেন, ‘প্রতিদিন এই বাজারে দুধ বিক্রি করতে আসি। আমার গরুর প্রতিদিন ১২ কেজি দুধ হয়। বাড়ির কাছ থেকে অটোরিকশায় আসি। পাইকারি বিক্রি করলে ৫৫-৬০ টাকা পাওয়া যায়। আর খুচরা বিক্রি করলে ৫ টাকা কেজিতে বেশি পাওয়া যায়।

 

বাজারে নিয়মিত দুধ কিনতে আসেন আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন সকালে হাঁটতে বের হই। হাঁটার জন্য শিববাড়ি হিজুলির রাস্তাটা খুব নিরাপদ। প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৬টায় বের হই এক ঘণ্টার মত হেঁটে বাড়ির ফেরার পথে এক লিটার করে দুধ কিনি। এখানকার দুধ অন্যান্য বাজারের চেয়ে অনেক ভালো। দামও তুলনামূলকভাবে কম।

 

পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর আরশেদ আলী বিশ্বাস বলেন, ‘আমাদের এই হিজুলি বাজারে বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রচুর পরিমাণে টাটকা শাক-সবজি, দেশীয় ফলমূল ও দুধ আসে। এই বাজারের বেশ সুনামও রয়েছে। প্রতিদিন এই বাজারে অর্ধশতাধিক দুধ বিক্রেতা প্রায় ২০-২৫ মণ দুধ বিক্রি করেন।

 

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আজিজুল হক বলেন, ‘এই বাজারে সব প্রান্তিক কৃষকরা দুধ বিক্রি করতে আসেন। এখন পর্যন্ত ভেজাল দুধ বিক্রির কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

 

আরও খবর

Sponsered content