বিনোদন

কোন দলের প্রার্থী হবেন হিরো আলম, জানা যাবে ৩০ নভেম্বর

কোন দলের প্রার্থী হবেন হিরো আলম, জানা যাবে ৩০ নভেম্বর

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আলোচিত ইউটিউবার আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম কোন দলের প্রার্থী হবেন তা আগামী ৩০ নভেম্বর জানা যাবে। শনিবার (২৫ নভেম্বর) সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা জানান তিনি।

 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন হিরো আলম। স্বতন্ত্র নয়, রাজনৈতিক দল থেকে মনোনয়ন নেবেন তিনি। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বগুড়া-৬ আসনে। তবে এসব বিষয়ে আরও কয়েক দিন পর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসবে।

 

হিরো আলম বলেন, “এবার দলীয় মনোনয়নে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব। একটি দলের মনোনয়নপত্র কিনেছি।

 

তিনি বলেন, “দলের নাম আগেই প্রকাশ করছি না। আমি এখন দুবাই আছি। দুবাই থেকে দেশে ফিরব আগামী পরশু। আগে বগুড়া যাব। তারপর আগামী ৩০ তারিখ মনোনয়ন পত্র জমা দেবো। তখনই সবাই জানতে পারবে আমি কোন দল থেকে নির্বাচন করছি। আর ছোট নয়, দল বড়ই আছে। কোনো সমস্যা নেই।”

 

হিরো আলম বলেন, “আগেই কোনো দলের নাম বলব না। আগেই কোনো দলের নাম লিখবেন না।” এর আগে তিনি বলেন, “সব দল অংশগ্রহণ না করলে এবার তিনি নির্বাচনে যাবেন না।” তবে এখন নির্বাচনে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সব দল না করুক। অনেকগুলো দল তো করছে। জাতীয় পার্টি করছে। তৃণমূল বিএনপি তো বিএনপিরই একটা অংশ। এখানে তো বিএনপির বেশিরভাগ নেতারাই আছেন। বিএনপি ছাড়া তো সব দলই অংশগ্রহণ করছে।”

 

হিরো আলম বলেন, “এখন ভোট সুষ্ঠু হবে কি না জানি না। তবে এবার যদি সুষ্ঠু নির্বাচন না হয়, প্রতিটাবার যদি সরকার এরকম নির্বাচন করে… বহির্বিশ্বের তো এমনি আমাদের ওপর আস্থা নেই, এবারও যদি এ রকম নির্বাচন করে তাহলে আরও আস্থা থাকবে না। জনগণের ভোটের ওপর তো আগ্রহ একেবারে উঠেই গেছে। আমরা যদি একটু ভোটারদের আগ্রহ তৈরি করে ভোটার মাঠে নিয়ে আসি, তারপরেও যদি ভোটাররা ভোট দিতে না পারেন তাহলে এর থেকে কষ্টের তো আর কিছু হতে পারে না।”

 

তিনি বলেন, “তবে ভোট কারচুপি হবে কি না সেটা ভোটের দিন না আসলে বলা যাবে না। আমরা তো সবসময় আশা রাখি সুষ্ঠু নির্বাচন হবে, কিন্তু ভোটের দিন তো ফলাফল উল্টো দেখা যায়।” দুবাই যাওয়ার আগে মনোনয়নপত্র তুলেছেন বলে জানান হিরো আলম। এবার তিনি বগুড়া-৪ এবং বগুড়া-৬ থেকে নির্বাচন করতে চান।

 

তথ্য বলছে, বগুড়া সদর উপজেলার এরুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা হিরো আলম এক সময় ক্যাবল নেটওয়ার্কের ব্যবসা (ডিশ সংযোগ) করতেন। ২০০৮ সালে ২৩ বছর বয়সে তিনি মডেলিংয়ে যুক্ত হন। এরপর নিজের অভিনয় ও গানের দৃশ্য রেকর্ড করে ক্যাবল নেটওয়ার্কে প্রচার করতে থাকেন। এতে এলাকার মানুষের কাছে তার জনপ্রিয়তা সৃষ্টি হয়। ওই জনপ্রিয়তাকে পুঁজি করে তিনি এরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে পরপর দুইবার সদস্য প্রার্থী হন। তবে প্রতিবারই তিনি পরাজিত হন।

 

২০১৬ সালে ‘‘হিরো আলম’’ নামে ফেসবুক পেজ খুলে অভিনয় ও গানের দৃশ্য শেয়ার করতে শুরু করেন আলম। তার পোস্টগুলো ব্যাপক ভাইরাল হয়। সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করা আলম একাদশ সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৪ আসনে জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন চেয়ে ব্যর্থ হন। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সিংহ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নন্দীগ্রাম উপজেলার চাকলমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে গেলে হামলার শিকার হন। ফলাফলে তিনি মাত্র ৬৩৮ ভোট পেয়ে জামানত হারান।

 

বগুড়া-৬ (সদর) ও বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে বিএনপির প্রার্থীরা দলীয় সিদ্ধান্তে পদত্যাগ করলে আসনগুলো শূন্য হয়। মনোনয়ন বাতিল, চাহিদামতো প্রতীক না পাওয়াসহ নানা নাটকীয়তা শেষে ২০২৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে হিরো আলম স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। সিংহ প্রতীক না পেয়ে একতারা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। বগুড়া সদর আসনে নৌকা মার্কার রাগেবুল আহসান রিপু ৪৯,৩৩৬ ভোট পেয়ে এমপি নির্বাচিত হন। সেখানে হিরো আলম (একতারা) ৫,২৭৪ ভোট পেয়ে জামানত হারান।

 

বগুড়া-৪ আসনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিক জাসদের এ কে এম রেজাউল করিম তানসেন (মশাল) ২০,৪০৫ ভোট পেয়ে এমপি নির্বাচিত হন। এখানে তার নিকটতম স্বতন্ত্র প্রার্থী আলোচিত ইউটিউবার হিরো আলম পান রেকর্ড ১৯,৫৭১ ভোট। মাত্র ৮৩৪ ভোটে তিনি পরাজিত হন।

 

সেই সময় সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনে কারচুপি অভিযোগ এনে ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেন হিরো আলম। ঘোষণা দেন উচ্চ আদালতে রিট করার।

 

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল তার বগুড়া-৪ আসনের ফলাফল পাল্টানোর অভিযোগ তদন্তের নির্দেশও দিয়েছিলেন।

 

আরও খবর

Sponsered content