অর্থনীতি

রমজানের আগেই বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম

রমজানের আগেই বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম

রমজান শুরু হওয়ার দুই সপ্তাহের বেশি বাকি। চাঁদ দেখাসাপেক্ষে আগামী ১২ মার্চ শুরু হচ্ছে সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র রমজান। রোজার সময় যত ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়তে শুরু করেছে নিত্যপণ্যের দাম। ইতোমধ্যে রাজধানীর বাজারে বেড়ে গেছে মাছ, গরুর মাংস, ব্রয়লার মুরগি, চিনি, পেঁয়াজ, খেজুরসহ নিত্যপণ্যের দাম। ফলে সীমিত ও নিম্ন-আয়ের মানুষের ওপর চাপ বাড়ছে। রমজানে পণ্যের দাম আরও বাড়বে এমন শঙ্কায় দিশেহারা সাধারণ মানুষ। হঠাৎ করে দামের এমন ঊর্ধ্বগতিতে বিপাকে পড়ছেন খেটে খাওয়া লোকজন।

 

ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা বলছেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বাজার মনিটরিং না করায় বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে। আর খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি বাজারে দাম বেড়েছে, তাই বাধ্য হয়ে তাদের বেশি দামে পণ্য বিক্রি করতে হচ্ছে।

 

রোববার রাজধানীর খিলগাঁও রেলগেট বাজার, শান্তিনগর বাজার, সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজার, মালিবাগ রেলগেট বাজার, রামপুরা, মেরাদিয়া বাজার, হাতিরপুল ও কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে- পবিত্র শবেবরাতে চড়া রয়েছে মাংসের বাজার।

 

সপ্তাহের ব্যবধানে একলাফে মাংসের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ১০০ থেকে ১৩০ টাকা। বিভিন্ন বাজারে অধিকাংশ দোকানেই গরুর মাংস ৭৫০ টাকা কেজি দামে বিক্রি হচ্ছে।তবে কোথাও ৮০০ টাকাও চাওয়া হচ্ছে। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকা।

 

আর ব্রয়লার মুরগির প্রতি কেজি দাম পড়ছে ২০০ থেকে ২১০ টাকা। কোথাও কোথাও বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা। মাছের মধ্যে চাষের রুই ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ও পাঙাশ ২৫০ টাকা কেজি। ছোলা ও খেজুরের দাম এবার রোজার বেশ আগেভাগেই বেড়েছে।

 

রাজধানীর মালিবাগ রেলগেট বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী কামাল হোসেন আরটিভি নিউজকে বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় এই সপ্তাহে প্রতিটি পণ্যের দামই বেড়েছে। তবে রমজানের অতিপ্রয়োজনীয় পণ্য ছোলার দাম কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়ে থেকে ১০০-১০৫ টাকায় উঠেছে।

 

শান্তি নগরের খুচরা ব্যবসায়ী শফিক আরটিভি নিউজকে বলেন, রমজানের আগেই সবকিছুর দাম বেড়ে যাচ্ছে। চিনির দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ১৪৫-১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কিছু করার নাই, আমাদের বেশি দাম দিয়ে কিনতে হয়। বিক্রি করতে হয় বেশি দামে।

 

রিয়াজুল ইসলাম একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। পরিবার নিয়ে থাকেন রাজধানীর মগবাজারে। মালিবাগ রেলগেট বাজারে কথা হয় তার সঙ্গে। আরটিভি নিউজকে তিনি বলেন, এভাবে চলেনা, রমজান আসতে না আসতেই সব কিছুর দাম বেড়ে গেছে। আমরা যারা সীমিত আয়ের লোক, আমরা যাব কোথায়। আমাদেরতো আর আয় বাড়েনি।

 

তিনি আরও বলেন, সরকারকে কঠোরভাবে বাজার মনিটর করতে হবে। সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করতে হবে। তাদের বাঁচাতে হবে। গরীব মেরে দেশ চালানো যাবে না। রাজধানীর সেগুনবাগিচা বাজারে কথা হয় সাথী ইসলামের সঙ্গে। তিনি আরটিভি নিউজকে বলেন, আমরা যে চাকরি করি, সীমিত আয়। সংসার চালাতে হিমসিম খাচ্ছি।খুব কষ্টে আছি।

 

কারওয়ান বজারে কথা হয় তরিকুল ইসলামের সঙ্গে। প্রায়ই তিনি অফিস থেকে ফেরার পথে বাজার করেন এখানে। তিনি বলেন, সব জিনিসের দাম যেহারে বাড়ছে, আয় তো আর বাড়ছে না। রমজানের আগেই যদি এভাবে জিনিসপত্রের দাম বাড়ে, তাহলে রমজান এলে কি হবে, তাই ভাবছি। আসলে এর লাগাম টানা দরকার।

 

প্রসঙ্গত, রোজার আগে বাজারে পণ্যের দাম সহনীয় রাখতে চাল, চিনি, তেল ও খেজুরের শুল্ক-কর কমিয়েছে সরকার।গত ৮ ফেব্রুয়ারি এসব পণ্যের শুল্ক-কর কমানোর ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তবে খুচরা বাজারে কোনো প্রভার পড়েছে না।

 

আরও খবর

Sponsered content