খেলাধুলা

বাংলাদেশের সেই প্রথম জয় যেমন ছিল

বাংলাদেশের সেই প্রথম জয় যেমন ছিল

১৯৯৭ সালের আইসিসি ট্রফি জয়ের পরই নতুন দিগন্তের সূচনা হয় বাংলাদেশ ক্রিকেটে। সেবার মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠেয় টুর্নামেন্টে তৎকালীন ক্রিকেট পরাশক্তি কেনিয়াকে পরাজিত করে লাল-সবুজরা। এরপরই মিলেছিল ওয়ানডে স্ট্যাটাস।

 

ঠিক দুই বছর পর আমিনুল ইসলাম বুলবুলের নেতৃত্বে প্রথমবার বিশ্বমঞ্চে প্রতিনিধিত্ব করে টাইগাররা। এই যাত্রায় পাকিস্তান ও স্কটল্যান্ডকে পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ দেয় আকরাম- খালেদরা। এতে ক্রিকেটের সবচেয়ে অভিজাত সংস্করণের আঙিনায় মসৃণ হয় বাংলাদেশের পথচলা। ২০০০ সালে টেস্টের যুগে পা রাখে বাংলাদেশ।

 

নিজেদের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৪০০ রান দাঁড় করায় বাংলাদেশ। এর মধ্য দিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটকে এক আগমনী বার্তাও পাঠায় টেস্টের নতুন সদস্যরা। টাইগারদের এই মহাকাব্যে ১৪৫ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন দলপতি বুলবুল। তবে দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যর্থতায় ভারতের সঙ্গে ৯ উইকেটের অসহায় পরাজয় বরণ করে তারা।

 

সেদিন হারলেও ঠিকই আশার সঞ্চার হয় বাঙালির হৃদয়-মন্দিরে, হয়তো বিশ্ব ক্রিকেটে ছড়ি ঘুড়িয়ে লাল-সবুজের পতাকাটা বিশ্ব মঞ্চে তুলে ধরবেন লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। দীর্ঘ পাঁচ বছর সেই আশা কিছুটা দুঃস্বপ্নের শঙ্কায় রূপ নেয়। টেস্টে জয় তো দূরের কথা, অনেক ম্যাচে ইনিংস ব্যবধানেই পরাজয় দেখেছে টাইগাররা।

 

তবে ধৈর্যের খেলা টেস্ট! ১০ জানুয়ারি, ২০০৫। দুপুর ১২টা ৫৩ মিনিট। এই দিনে এসে সেই ধৈর্যের অবসান ঘটে। ৫ বছর দুই মাস, ৩১ পরাজয়, তিন ড্র আর অসংখ্য বিনিদ্র রাতের অপেক্ষা শেষে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে প্রথম জয় পায় লাল-সবুজেরা। বহু প্রতীক্ষার সেই জয় আসে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। ঐতিহাসিক সেই জয়ের সাক্ষী চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়াম।

 

এই টেস্টের নেতৃত্বে ছিলেন হাবিবুল বাশার সুমন। ৬ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া সেই টেস্ট ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামে লাল-সবুজেরা। ব্যাটিংয়ে নেমে অধিনায়ক বাশারের ৯৪ রান, রাজিন সালেহর ৮৯ ও নাফিস ইকবালের ৫৬ রানের সুবাধে ৪৮৮ রানের বড় পুঁজি দাঁড় করায় টাইগাররা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে অধিনায়ক তাদেন্দা তাইবুর ৯২ রানে ৩১২ রানে অল-আউট হয় সফরকারীরা।

 

লাল-সবুজের হয়ে ৫ উইকেট নেন বাঁহাতি অর্থোডক্স মোহাম্মদ রফিক। এতে ১৭৬ রানের লিড পায় বাশার-মাশরাফীরা। দ্বিতীয় ইনিংসে অধিনায়কের ব্যাট থেকে আসে ৫৫ রান। এরপর ৯ উইকেট হারিয়ে ২০৪ রান করে প্রথমবার ইনিংস ঘোষণা করে স্বাগতিকরা।

 

রোডেশিয়ানদের দ্বিতীয় ইনিংসে বাধা হয়ে দাঁড়ায় হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। এবার বাংলাদেশের ত্রাতা হয়ে ৬ উইকেট নিয়ে জিম্বাবুয়ের দ্বিতীয় ইনিংসে ধস নামিয়ে ম্যান অফ দ্য ম্যাচ হয়েছিলেন অভিষিক্ত এনামুল হক জুনিয়র। এতে মাত্র ১৫৪ রানে অল-আউট হয় সফরকারীরা। ফলে ২২৬ রানের স্বস্তির জয় পায় লাল-সবুজেরা।

 

এই জয়ের পরপরই লাল-সবুজের পতাকা নিয়ে ‘ল্যাপ অব অনার’ করে বাশার-মাশরাফীরা। এমন দৃশ্যের জন্যই পাঁচ বছর অপেক্ষা করেছিল টাইগার সমর্থকরা।

 

আরও খবর

Sponsered content