সারাদেশ

আল্লাহর কসম নৌকা না পেলে নির্বাচন করতাম না বললেন এমপি লিপি

আল্লাহর কসম নৌকা না পেলে নির্বাচন করতাম না বললেন এমপি লিপি

কিশোরগঞ্জ-১ (কিশোরগঞ্জ সদর-হোসেনপুর) আসনের আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি বলেছেন, ‘আমি আল্লাহর কসম করে বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি যদি আমি এ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেতাম, নৌকা না পেতাম তাহলে নির্বাচন করতাম না।

 

আমি এখানে কোনোদিন স্বতন্ত্র হয়ে নৌকার বাইরে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বাইরে নির্বাচন করতে আসতাম না। বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে কিশোরগঞ্জ পৌর শহরের ইসলামিয়া সুপার মার্কেট এলাকায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

 

জাকিয়া নূর লিপি আরও বলেন, ‘আমি সৈয়দ নজরুলের কন্যা যিনি বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিনি নৌকার মাঝি হয়ে নির্বাচন করেছেন। পরে আমার ভাই এ ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন।

 

আপনাদের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। নৌকা আমাদের স্বাধীনতার মার্কা, আমাদের পরিবারের মার্কা, এ পরিবার থেকে তো আমি বের হতে পারি না। সুতরাং প্রশ্নই উঠে না যে নৌকা পাব না, আর অন্য মার্কা নিয়ে নির্বচান করব।

 

তিনি বলেন, ‘আমাকে অত্যন্ত ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বলতে হচ্ছে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যখন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়ন ফরম বিক্রি করার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে তখন অনেকেই কিশোরগঞ্জ-১ (কিশোরগঞ্জ সদর–হোসেনপুর) আসনের জন্য মনোনয়নপত্র কেনে তারপর দাখিল করলেন। যেহেতু আমি এখানের বর্তমান সংসদ সদস্য তাই এর ধারাবাহিকতায় মনোনয়নপত্র দাখিল করেছি।

 

শেখ হাসিনা ও মনোনয়ন বোর্ড অনেক যাচাই-বাছাই করে আমাকে এ আসনে পুনরায় মনোনয়ন দিয়েছেন। পাঁচ বছর আগেও আমি প্রস্তুত ছিলাম না। যখন আপনাদের অনুভূতির নেতা সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের মৃত্যুর পর আমাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। আমার পিতার স্বপ্ন ও ভাইয়ের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার জন্য আমি সেই পবিত্র দায়িত্ব মাথা পেতে নিয়েছি। আমি চেষ্টা করেছি সেই দায়িত্ব পালন করতে। আমার হয়তো কিছু ভুল হয়েছে নিজের অজান্তে কাউকে কষ্ট দিয়েছি আপনারা আমাকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

 

তিনি আরও বলেন, এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলাম আমার শ্রদ্ধেয় বড় ভাই। আমার চারটি ভাইয়ের মধ্যে আমরা দুই বোন ছোট, তাদের খুব আদরের। যিনি আমার বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর আমাকে বাবার মমতায়, ভাইয়ের আদরে আগলে রেখেছেন। একইভাবে আমার অন্য তিন ভাই আমাদের আগলে রেখেছেন। আমার ভাই সাফায়েতুল ইসলামের কাছে আমরা খুব আদরের ছিলাম।

 

সেই ভাই এমন একটি কাজ করবে (স্বতন্ত্র প্রার্থী হবে) আমরা স্বপ্নেও ভাবিনি। যখন চিন্তা করি তখন হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়, খুব কষ্ট পাই। যেই ভাই আমাদের আগলে রাখার কথা সেই ভাই এখন আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্বে, নৌকার বিরুদ্ধে, শেখ হাসিনার ইচ্ছার বিরুদ্ধে নির্বাচন করছে। আমি শুধু একটি কথায় বলব, আল্লাহ আমার ভাইকে হেদায়েত করুক। তিনি আবার আমাদের ঘরে ফিরে এসে নৌকাতে ফিরে আসুক।

 

সৈয়দ নজরুলের কন্যা বলেন, আমি জানি আমার ভাই সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলাম ও চাচাতো ভাই সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটু যখন ভোটকেন্দ্রে যাবে তখন ঘুরে ফেরে নৌকাতে ভোট দেবে। আপনারা ধরে নেন এতে কোনো সন্দেহ নেই।

 

আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ আমার পাশে থাকবেন এবং আগামী পাঁচ বছর যেন আপনাদের পাশে থেকে আপনাদের সেবা করতে পারি সে জন্য নৌকাতে ভোট দিয়ে আমাকে জয়ী করবেন। সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম যেমন মমতা দিয়ে এ কিশোরগঞ্জের শান্তি বজায় রেখেছিলেন আমিও যেন এ শান্তি বজায় রাখতে পারি সে দোয়া করবেন।

 

পথসভায় জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ ইমাম, সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছোট মেয়ে সৈয়দা রাফিয়া নূর রুপা, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মামুন আল মাসুদ খান, জেলা যুব লীগের আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম বকুল, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাত্তার, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শরীফুল ইসলাম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শফিকুল গণি ঢালী লিমন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মোল্লা সুমন উপস্থিত ছিলেন।

 

আরও খবর

Sponsered content