সারাদেশ

আওয়ামী লীগ নেতার প্রেমের ফাঁদে পড়ে আদালতে গেলেন নারী, কী ঘটেছিল তার সঙ্গে

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিধবা নারীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আদালতে মামলা দায়েরের পর পুরো এলাকাজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।

 

সোমবার (১০ জুন) সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, অভিযুক্ত চেয়ারম্যান আব্দুল মমিনের কাছে সরকারি সহায়তা নিতে গিয়ে প্রতারণার ফাঁদে পড়েন ওই নারী। এরপর দীর্ঘ দেড় বছর পরকীয়া, শারিরিক মেলামেশার পর তাকে গ্রহণ করতে অস্বীকার জানালে আদালতে মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী নারী।

 

ঘটনাটি পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার কাজলদিঘী কালিয়াগঞ্জ ইউনিয়নের। অভিযুক্ত চেয়ারম্যান কাজলদিঘী কালিয়াগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি।

 

এদিকে চেয়ারম্যানের এমন কাণ্ডে প্রতিবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় গ্রামবাসী। তারা অভিযোগ করে বলেন, বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর থেকে পুরো এলাকায় শুধু এ বিষয় নিয়েই কথা ছড়িয়েছে। সবার মুখে চেয়ারম্যানের এই ঘটনা।

 

ইউনিয়ন বাসিরা বলছেন, সাধারণ মানুষ ও ইউনিয়ন বাসী বিপদে পড়লে সমাধানের জন্য আগে চেয়ারম্যানকে খুঁজেন। কিন্তু এখন সব দেখছি উল্টো, একজন জনপ্রতিনিধি নিজেই অনৈতিক জড়িয়ে পড়েছেন। এটা মেনে নেয়া সম্ভব না। এর কারণে পুরো ইউনিয়নের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। আমারা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।

 

কথা হয় ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, আমার স্বামী মারা যাওয়ার পর ছেলে-মেয়েদের নিয়ে অনেক কষ্টে দিন যাপন করছি। গত দেড় বছর আগে সরকারি সহায়তার জন্য চেয়ারম্যানের কাছে গিয়ে ছিলাম। তিনি আমার নাম ঠিকানা নিয়ে আমাকে আশ্বাস দেন। এরপর থেকে তিনি নিয়মিত বিভিন্ন কাজে এলাকায় ও আমার বাড়িতে আসতেন। দেড় বছর আগে একদিন আমার ঘরে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন তিনি।

 

চেয়ারম্যান হিসেবে সম্মান দিয়ে তাকে ঘরে থাকতে বলে আমি আমার বাড়ির কাজ করি। আমার অজান্তে তিনি আমার শরীরে হাত দেন। এরপর আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে শারীরিক মেলামেশা করে। লজ্জা ও ভয়ে আমি বিষয়টি কাউকে জানাতে পারিনি।

 

পরে চেয়ারম্যানকে বিয়ে করার কথা বললে তিনি আমার সঙ্গে সব ধরণের যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। বিচার চেয়ে মামলা করলে বিভিন্নভাবে আমাকে হুমকি দেয়া হচ্ছে। কৌশলে আমাকে নিয়ে জোর পূর্বক ভয়ভীতি দেখিয়ে একটা কাগজে স্বাক্ষর নিয়েছেন তিনিসহ বেশ কয়েকজন। আমি বিচার চাই, আমি চেয়ারম্যানকে বিয়ে করবো।

 

অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মমিন বলেন, স্থানীয় একটি চক্র আমাকে ফাঁসাতে তাকে দিয়ে গত ৩ জুন আদালতে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। আমি ঘটনার সঙ্গে জড়িত না।

 

এ বিষয়ে ওই নারীর পক্ষের আইনজীবী শ্রী. বিপুল রায় বলেন, ভুয়া বিয়ের মাধ্যমে ওই নারীর সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে পঞ্চগড় আমলি-৩ আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বর্তমানে মামলাটি তদন্তাধীন। আমরা আশাবাদী তিনি সুষ্ঠু বিচার পাবেন।

 

আরও খবর

Sponsered content