সারাদেশ

বিয়ে যখন হচ্ছে স্কুলে গিয়ে বিদায় নিয়ে আসি, এই কথা বলে পালালো কনে

বিয়ে যখন হচ্ছে স্কুলে গিয়ে বিদায় নিয়ে আসি, এই কথা বলে পালালো কনে

স্কুলে গিয়ে সহপাঠীদের থেকে বিদায় নিয়ে আসার কথা বলে বিয়ের আসর থেকে পালিয়েছেন এক কনে। ওই কনের বয়স ১৩ বছর। রাজশাহীর আলোর পাঠশালায় অষ্টম শ্রেণিতে পড়ছেন তিনি। রোববার (১০ মার্চ) সকালে এ ঘটনা ঘটে।

 

মেয়েটি জানায়, গতকাল শনিবার রাতে তাকে বিয়ের ক্ষীর খাওয়ানো হয়। রোববার সকালে বরপক্ষ আসে বিয়ের জন্য। মেয়েটি কৌশল করে মাকে বলে, ‘বিয়ে যখন হচ্ছে স্কুলে গিয়ে বিদায় নিয়ে আসি। পরে বিদ্যালয়ে এসে শিক্ষকদের তার বিয়ের বিষয়টি জানালে জানা যায়, মেয়েটির ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার মা জোর করে তাকে বিয়ে দিচ্ছেন।

 

শিক্ষকেরা সব শুনে তার বিয়ে বন্ধের উদ্যোগ নেন। এ বিষয়ে রাজশাহীর আলোর পাঠশালার প্রধান শিক্ষক রেজিনা খাতুন জানান, মেয়েটি তাদের বিদ্যালয়ের একজন ভালো ছাত্রী। পড়াশোনার প্রতি খুবই আগ্রহী একজন শিক্ষার্থী। মেয়েটির বাবা নেই। মা অন্যত্র আবার বিয়ে করেছেন।

 

কয়েক দিন আগে মেয়েটি জানিয়েছিল, মা ও সৎবাবা তাকে বিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন। তারা যেকোনো সময় তার বিয়ে দিয়ে দেবেন। কিন্তু সে প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে করতে চায় না। যেভাবেই হোক বিয়ে ঠেকাতে হবে।

 

আজ রোববার সকাল সাড়ে আটটায় বিদ্যালয়ে এসে ওই কিশোরী শিক্ষকদের বিয়ের বিষয়টি জানায়। কৌশল করে সে বিদ্যালয়ে এসেছে। এদিকে মেয়ের ফিরতে দেরি হওয়া দেখে মা বাড়ির মালিককে বিদ্যালয়ে পাঠান।

 

বাড়ির মালিক এসে বলেন, মেয়ে না যাওয়ায় মা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অবশ্য শিক্ষকদের জেরার মুখে তিনি স্বীকার করেন, মেয়ের মা অসুস্থ হননি। অসুস্থতার কথা তাকে শিখিয়ে দেওয়া হয়েছে।

 

এ ঘটনার পর সকাল ১০টায় আলোর পাঠশালার শিক্ষকরা মেয়েটির বাসায় যান। তারা মেয়েটির মাকে সব বুঝিয়ে বলার পর মেয়েকে বিয়ে দেবেন না বলে ওয়াদা করেন মা। শিক্ষকেরা চলে আসার পর বরপক্ষের লোকজন ফোন করে প্রধান শিক্ষক রেজিনা খাতুনকে জানান, বিয়ে করতে না দিলে তাদের যাতায়াতের খরচ দিতে হবে।

 

এ অবস্থা দেখে প্রধান শিক্ষক মহিলা অধিদপ্তরের উপপরিচালককে ফোন করেন। তিনি এসে মেয়ের মায়ের কাছ থেকে মুচলেকা নেন এবং অঙ্গীকার করান প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত তিনি মেয়েকে বিয়ে দেবেন না।

 

সবাই চলে যাওয়ার পর মেয়ের মা প্রধান শিক্ষককে ফোন করে বলেন, সরকারের ঘরে যখন আমার নাম গেছে, আমার যখন এতই দোষ, এখন এই মেয়ের দায়দায়িত্ব আমি আর বহন করতে পারব না।

 

তবে আলোর পাঠশালার প্রধান শিক্ষক জানান, এ ঘোষণা দেওয়ার পর রাতে কী হয়, তিনি বলতে পারছেন না। তারা সতর্ক আছেন।

 

আরও খবর

Sponsered content